Published : 15 Oct 2024, 11:33 AM
নিকো উইলিয়ামসের ফুটবল ক্যারিয়ারে এখন প্রত্যূষ বলা চলে। আলো ছড়িয়ে ছুটে চলেছেন তিনি। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তরুণ ফুটবলারদের একজন তিনি। ফুটবল দুনিয়াকে আরও আলোকিত করার অনেক সম্ভাবনা তার আছে। তবে তার জীবনের মূল লক্ষ্যটা সরাসরি ফুটবল সংক্রান্ত নয়। আজীবন তিনি লড়াই চালিয়ে যেতে চান বর্ণবাদের বিরুদ্ধে।
আথলেতিক বিলবাওয়ের হয়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারে নিজের আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন উইলিয়ামস। গত ইউরোতে স্পেনের হয়েও দারুণ খেলে নজর কেড়েছেন ২২ বছর বয়সী উইঙ্গার। এরপর তো তার দিকে নজর পড়ে বার্সেলোনাসহ বেশ কিছু ক্লাবের। তবে তিনি রয়ে যান শৈশবের ঠিকানা বিলবাওতেই।
নিকো ও তার ৮ বছরের বড় ভাই বিলবাওয়ের ফরোয়ার্ড ইনাকি উইলিয়ামসের জন্ম বিলবাওতেই। তবে তাদের বাবা-মা ঘানা থেকে সাহারা মরুভুমি পাড়ি দিয়ে এসেছিলেন স্পেনে। পরে অনেক লড়াই করে তাদের পরিবার এখানে থিতু হয়েছে। এই দেশকে তারা আপন করে নিয়েছেন। কিন্তু তাদেরকে অনেকে এখনও আপন করে নেননি, যেটির একটি বড় কারণ তাদের গায়ের রং।
গত মৌসুমে বিলবাওয়ের হয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন নিকো উইলিয়ামস। আতলেতিকোর শাস্তিও হয়েছিল তখন। আতলেতিকো, ভালেন্সিয়াসহ স্পেনের বিভিন্ন মাঠে বর্ণবাদের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে উইলিয়ামস ভাই, ভিনিসিউস জুনিয়রসহ অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারের।
স্পেনের ক্রীড়া পত্রিকা এল মুন্দোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিকো উইলিয়ামস বললেন, তার আসল লড়াই ফুটবলীয় নয়, বরং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে।
“কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে আমার ভাই ও আমার গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ আছে জীবনে, সেটা হলো বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। এটা আমার জীবনের এক নম্বর লক্ষ্য। ‘পাবলিক ফিগার’ হিসেবে এই লড়াইয়ে অবদান রাখতে আমি পথচ্যুত হতে পারি না, খ্যাপাটে হতে পারি না, পা মাটিতেই রাখা থেকে ভিন্ন কিছু করতে পারি না।”
শুধু ফুটবল মাঠে নয়, স্পেনজুড়ে বর্ণবাদের অনেক ঘটনাই ঘটে নিত্য। তবে এই মানসিকতার লোকের সংখ্যা কমে আসছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেই বিশ্বাস করেন নিকো উইলিয়ামস। নিজ দেশ ছেড়ে উন্নত জীবনের খোঁজে স্পেনে আসা মানুষদের জন্য সবসময় কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয়ও শোনালেন স্পেনের ইউরো জয়ে বড় অবদান রাখা এই ফুটবলার।
“আমার মনে হয়, স্পেন ঠিক পথেই আছে এবং আমাদের এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে। এই উন্নতি দেখে আমি খুবই খুশি। যদিও কিছু লোক সবসময়ই অভিবাসীদের ভুলভাবে উপস্থাপন করতে চায়, তবে তাদের সংখ্যা সীমিত।"
“প্রত্যেকের মধ্যেই এই সচেতনতা তৈরি করা জরুরি যে, অনেক মানুষই স্পেনে আসে নিজেদের রুটিরুজির জন্য, নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য, যা তারা নিজ দেশে পারবে না এবং সন্তানদের আরও উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য। আমার পরিবারকে সেই কঠিন পথ বেছে নিতে হয়েছে। এই মানুষগুলোর (অভিবাসী) জীবন আরও উন্নত করার জন্য সামর্থ্যের সবটুকুই করব আমি।”