কোপা আমেরিকা
Published : 13 Jul 2024, 10:05 AM
কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের পর গ্যালারির দর্শকদের সঙ্গে মারামারির ঘটনায় ফুটবলারদের পাশে দাঁড়ালেন উরুগুয়ে কোচ মার্সেলো বিয়েলসা। দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকেও পাশে পেলেন দারউইন নুনেস, হোসে মারিয়া হিমেনেসরা।
ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় গত বৃহস্পতিবার সকালে ম্যাচ শেষে তাৎক্ষণিকভাবে দর্শকদের সঙ্গে ফুটবলারদের বিবাদের ঘটনাটি বুঝতে পারেননি বিয়েলসা। পুরো বিষয়টি জানার পর লাতিন আমেরিকান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা কনমেবলের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অভিজ্ঞ কোচ।
সেদিন হেফারসন লের্মার একমাত্র গোলে ফাইনালে উঠে যায় কলম্বিয়া। এরপর মাঠেই দুই দলের ফুটবলার, টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যরা বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর ডাগআউটের পাশের সিড়ি বেয়ে গ্যালারিতে উঠতে দেখা যায় উরুগুয়ের ফুটবলারদের। ওই পাশে তখন কলম্বিয়ার জার্সি পরা দর্শকই ছিল বেশি।
পরে গ্যালারি দর্শকদের সঙ্গে হাতাহাতি, মারামারি লেগে যায় নুনেস, হিমেনেসদের। বেশ কিছুক্ষণ পর শান্ত হন উরুগুয়ের ফুটবলাররা। অধিনায়ক হিমেনেস জানান, পরিবারের সদস্যদের রক্ষার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন তারা। আর কনমেবলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ঘটনার তদন্ত করবে তারা।
তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে কানাডার মুখোমুখি হওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনের বেশিরভাগ সময় সেমি-ফাইনাল ম্যাচের ওই ঘটনা নিয়েই কথা বলেন বিয়েলসা। নিজের ফুটবলারদের আগলে রেখে কনমেবলের ওপর আঙুল তোলেন ৬৮ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন কোচ।
“গ্যালারির দর্শকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কাদের, তা আপনারা জানেন। আপনাদের জিজ্ঞেস করা উচিত, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ফুটবলারদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে কিনা।”
“মা, স্ত্রী-সন্তানের ওপর আক্রমণ করা হলে এবং পালানো বা প্রতিরোধের পথ না থাকলে যে কোনো মানুষ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাত, ফুটবলাররা সেটিই করেছে। তাদের কী করা উচিত ছিল? কেউই সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখতে চায় না। কিন্তু কী কারণে সেটি হয়েছিল, তা দেখতে হবে।”
বিশদ বার্তায় পুরো ঘটনা তুলে ধরে উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। ফুটবলারদের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই ঘটনাকে ‘অন্যায় তবে মানবিক দিক থেকে বোধগম্য প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
“ঘটনাটি এমন একটি জায়গায় ঘটেছে, যেখানে উরুগুয়ের সমর্থক ছিল তুলনামূলক কম। এর বেশিরভাগই ছিল (ফুটবলারদের) পরিবার এবং সেখানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এসব কিছু মিলিয়ে ফুটবলারদের ওই আচরণ অনিবার্য এবং স্বাভাবিক ছিল।”
মন্তব্যের জন্য বার্তাসংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সাড়া দেয়নি কনমেবল। আপাতত অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে ফুটবল সংস্থাটি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে উরুগুয়ের ক্রীড়ামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান বাউহার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কয়েকজন ফুটবলার হয়তো দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পাবেন।
“আমাদের কয়েকজন ফুটবলার নিশ্চিতভাবেই চলতি বছর বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুটি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবে। আশা করি যত কম ম্যাচ ও যত কম সম্ভব ফুটবলার শাস্তি পাক।”
সেমি-ফাইনালে সেই মাঠেই বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে কানাডার বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ খেলবে উরুগুয়ে।