Published : 09 Jun 2025, 12:38 PM
ফাইনালে নুনো মেন্দেসের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল লামিনে ইয়ামালকে আটকানো। টুর্নামেন্ট থেকে তার ও তাদের চাওয়া ছিল শিরোপা জয় করা। দেশের জন্য, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর জন্য। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দুটি লক্ষ্যই পূরণ করেছেন তরুণ লেফট ব্যাক। তার আনন্দও তাই যেন ছুঁতে চাইছে আকাশ।
পর্তুগাল ও স্পেনের নেশন্স কাপের ফাইনালে দুই দলে তারকার অভাব ছিল না। সেখানে তারকার ধারে-ভারে নুনো মেন্দেস একটু পেছনের সারিতেই ছিলেন। কিন্তু পারফরম্যান্সের দ্যুতিতে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়লেন তিনিই।
পর্তুগালের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারতেন যিনি, সেই ইয়ামালকে একরকম পকেটবন্দি করে রাখলেন মেন্দেস। নিজে দুর্দান্ত এক গোল করে সমতায় ফেরালেন দলকে। ম্যাচজুড়ে পারফর্ম করলেন সমানতালে। টাইব্রেকারেও তার নিখুঁত গতিময় শটের জবাব ছিল না স্পেনের গোলকিপারের। অসাধারণ পারফরম্যান্সে ফাইনালের ম্যান অব দা ম্যাচ ২২ বছর বয়সী লেফট ব্যাক।
মৌসুমজুড়েই তার পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। পিএসজির ট্রেবল জয়ে তার ছিল বড় ভূমিকা। মোহামেদ সালাহ থেকে এবার ইয়ামাল, ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের বড় হুমকিগুলো তিনি অকার্যকর করেছেন দারুণ দক্ষতায়।
ফাইনালের আগে ইয়ামাল যেমন ফর্মে ছিলেন, তাকে মনে হচ্ছিল অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু এই বিস্ময়-বালক নিষ্প্রভ হয়ে রইলেন মেন্দেসের সামনে।
ম্যাচ শেষে সেই তৃপ্তি ফুটে উঠল ম্যাচ-সেরার কণ্ঠে।
“মৌসুমজুড়ে আরও অনেক তারকার সঙ্গে যেমন লড়াই হয়েছে, তার (ইয়ামাল) সঙ্গেও ছিল তেমন কিছু। অনেক গ্রেট ফুটবলারের মুখোমুখি হয়েছি, টেকনিক্যালি দারুণ স্কিলড ফুটবলার, যারা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। সবার সঙ্গে লড়েছি। লামিনের ক্ষেত্রেও, ও যা সবচেয়ে ভালো করে, আজকে ওকে তা করতে দেইনি।”
“এটা দলকে সহায়তা করেছে এবং আমি খুবই খুশি যে, দলকে ট্রফি জিততে ভূমিকা রাখতে পেরেছি। মূল ব্যাপারটি হলো ধারাবাহিকতার। অনেক ম্যাচেই ভালো খেলেছি। ব্যক্তিগতভাবে কাজ করার পাশাপাশি পর্তুগাল ও পিএসজির হয়ে কোচদের সঙ্গে যেসব কাজ করি, সেসবের ফল পাচ্ছি।”
ইয়ামালকে জ্বলে উঠতে না দিয়ে এক ক্লাব সতীর্থের উপকারও করেছেন মেন্দেস। এবারের ব্যালন দ’র জয়ে পিএসজির উসমান দেম্বেলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হচ্ছে বার্সেলোনার লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়াকে। এই ম্যাচের পারফরম্যান্সে ইয়ামালের সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবেই কমবে কিছুটা হলেও। সামনের ক্লাব বিশ্বকাপেও জায়গা করে নিতে পারেনি বার্সেলোনা।
মেন্দেস বললেন, ক্লাব বিশ্বকাপে তারা দেম্বেলের জন্য খেলে তাকে সহায়তা করবেন ব্যালন দ’র জয়ের পথে এগিয়ে নিতে।
“ব্যালন দ’র? আমি উসমান দেম্বেলের সঙ্গে খেলি এবং অসাধারণ এক মৌসুম কাটিয়েছে সে। লামিনেও মৌসুমজুড়ে দারুণ খেলেছে। তবে উসমান ক্লাব বিশ্বকাপে খেলবে, লামিনে সেখানে থাকছে না। কাজেই উসমানের জন্য আমি খুশি।”
“বার্সা থেকে পিএসজিতে আসার আগে উসমানের অনেক চোট-সমস্যা ছিল। তবে সে অসাধারণ ফুটবলার। ফুটবলার হিসেবে যেমন, তেমনি মানুষ হিসেবেও তাকে অনেক পছন্দ করি আমি। ব্যালন দ’রের জন্য ওর প্রতি শুভকামনা। আমি ও আমরা, ওর সতীর্থ সবাই চেষ্টা করব ওকে এটি জয় করতে।”
নেশন্স লিগের ফাইনালে মেন্দেসের গোলের পর আবার পিছিয়ে পড়েছিল পর্তুগাল। পরে দলকে সমতায় ফেরান রোনালদো। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টুর্নামেন্টে ৮টি গোল করেছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সেও গোল করেছেন কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে।
মেন্দেস বললেন, এই শিরোপা রোনালদোর জন্য তাদের অর্ঘ্য।
“ক্রিস্তিয়ানোর আরেকটি শিরোপা জয়ে আমরা দারুণ খুশি। মাঠের ভেতরে-বাইরে সে অনেক সাহায্য করে আমাদের, আমাকেসহ সবাইকে অনেক পরামর্শ দেয়।”
“এই দলে আমাদের ওকে প্রয়োজন আরও অনেক দিন। তার মানসিকতা দুর্দান্তম সবসময়ই জয়ী মানসিকতা। এই দল ও এই ছেলেদের জন্য তিনি আদর্শ একজন।”