Published : 22 Jun 2025, 07:08 PM
পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ বা এর কম শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে আসছে বাজেটে যে করহার প্রস্তাব করা হয়েছিল সেখানে কিছুটা ছাড় দিয়েছে সরকার।
সব ধরনের আয় ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানান্তরের শর্তে এসব কোম্পানির করপোরেট কর ২৫ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে কোনো শর্ত ছাড়া এ করহার সাড়ে ২৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছিল।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে রোববার উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন হওয়া বাজেটে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সংসদ না থাকায় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে ২ জুন উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ১০ শতাংশ বা এর কম শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির জন্য সাড়ে ২৭ করহার প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এতে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির সমান করহার হয়ে যায় এসব কোম্পানির। বিদায়ী অর্থবছরে এসব কোম্পানির করহার ছিল ২৫ শতাংশ এবং সব ধরনের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করা হলে আরও আড়াই শতাংশ করছাড় সুবিধা পেত কোম্পানিগুলো।
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের সময় সেখানে শর্তের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে ছাড় পেতে সব লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে করার শর্ত থাকলেও নতুন অর্থবছর থেকে সব আয় ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানান্তরের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ শর্ত পরিপালনে তালিকাভুক্ত এসব কোম্পানির কর আড়াই শতাংশ কমে ২৫ শতাংশ হবে। তা না হলে এসব কোম্পানিকে কর দিতে হবে সাড়ে ২৭ শতাংশ।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি, যাদের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিও বা সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ছাড়া হয়েছে সেগুলোর করপোরেট করহার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ।
তবে সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে সব ধরনের আয় ব্যাংকের মাধ্যমে হস্তান্তরের শর্তে এসব কোম্পানির আড়াই শতাংশ ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, যাতে করহার দাঁড়ায় ২০ শতাংশ।
বাজেট প্রস্তাবের পর ব্যবসায়ীরা বলে আসছিলেন, পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ বা ১০ শতাংশের কম শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব-আইপিওর মাধ্যমে ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার বাড়িয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করা হলে বৈষম্য তৈরি হবে। কোনো শর্ত রাখা না হলে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে কোনো পার্থক্য থাকবে না।
এর কারণ হিসেবে তারা বলছিলেন, সাধারণ কোম্পানি যেগুলো তালিকাভুক্ত নয়, সেগুলোর করহারই একই।
অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে ব্রিফিংয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, “পাবিলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি এবং নন-লিস্টেড কোম্পানির মধ্যে ডিফারেন্স আড়াই শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করতে গিয়ে যেটা দেখা গেল, ফিকি (ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফআইসিসিআই) থেকে লিস্টেড কোম্পানি যারা তারা এসেছিল, তাদের ৫ শতাংশ কর বেড়ে গেছিল। একটা গ্রুপের।
“সেটা আমরা যথাযথভাবে সমাধান করেছি। সেখানে আগে যেটা ছিল, মূলধন ১০ শতাংশের বেশি হতে হত আইপিওতে বা সরাসরি তালিকাভুক্তিতে। আমরা বলেছি যে, ১০ শতাংশের কম হলেও চলবে। অর্থাৎ তারাও তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুবিধাটা পাবেন। তাদের জন্য একটা ইতিবাচক সংবাদ।”
এর ফলে সরকারি কোম্পানিগুলো সরাসরি তালিকাভুক্ত করে ‘তারাও এ সুবিধা পাবে’ বলে তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা শুধু তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজের কর হার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।