Published : 14 Aug 2024, 09:55 PM
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এম মাসরুর রিয়াজ যোগ দেননি।
বুধবার অফিস চলাকালীন সময়ে তিনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যালয়ে যাননি।
তার বিএসইসির অফিসে না যাওয়ার মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে মঙ্গলবার রাতে জারি করা নিয়োগের প্রজ্ঞাপনটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
নতুন দায়িত্বে তিনি যোগ না দেওয়ায় ও প্রজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়াতে বিএসইসি ও শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মনে এ নিয়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। যদিও তার নিয়োগ বাতিলও করেনি সরকার।
রাতে বিএসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহসিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘আজকে অফিস টাইম শেষ হওয়ার পরও আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নতুন কোনো নির্দেশনা পাইনি।’’
আর মাসরুর রিয়াজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিন অফিস সূচির শেষ সময় পর্যন্ত বিএসইসির কর্মকর্তারা নতুন চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে কার্যালয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। সকালে চেয়ারম্যান কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা যোগাযোগ করলে মাসরুর রিয়াজ জানিয়ে রেখেছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে বিএসইসিতে যাবেন তিনি।
কর্মকর্তারা ধরে নিয়েছিলেন দুপুরের পরে নতুন চেয়ারম্যান আগাওগাঁওয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যালয়ে যাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত নতুন নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যানের দেখা পাননি তিনি।
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সরকারে পালাবদলের মধ্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজকে নিয়োগ দেয় সরকার।
বিএসইসির নেতৃত্বে মাসরুর রিয়াজ
মঙ্গলবার বিকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএফসিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মাসরুর রিয়াজকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিএসইসির দশম চেয়ারম্যান হিসেবে তার অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা। গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১০ অগাস্ট আগের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন।
মাসরুর রিয়াজ ২০১০ সাল থেকে ১০ বছর বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের বিনিয়োগ পরিবেশ ও বেসরকারি খাত উন্নয়ন ইউনিটের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন।
এর মধ্যে বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের বেসরকারি খাত উন্নয়ন কর্মসূচিতে ট্রেড অ্যান্ড কম্পিটেটিভনেস গ্লোবাল প্র্যাকটিস বিষয়ক সমন্বয়ক এবং তারপর ফাইন্যান্স, কম্পিটেটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিস বিষয়ক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের মার্চে পর্যন্ত তিনি বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের সিঙ্গাপুর অফিসে কাজ করেন, সেখানে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে কম্পিটেটিভনেস ইনিশিয়েটিভের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফান্ডের (বিসিআইএফ) প্রধান হিসেবেও দয়িত্ব পালন করেন মাসরুর রিয়াজ।
বেসরকারি খাতে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসির সঙ্গেও তিনি কাজ করেছেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইনভেস্টমেন্ট অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করলে সেখানে আইএফসির পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকে যোগ দেওয়ার আগে বাংলাদেশে ব্রিটিশ সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ডিএফআইডির উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেন রিয়াজ।
সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে রিয়াজ সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে গবেষণাতেও যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ধারণা দিতে তার নেতৃত্বাধীন পলিসি এক্সচেঞ্জ সম্প্রতি মেট্টোপলিনটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডিস্ট্রির সঙ্গে মিলে পিএমআই সূচক প্রকাশ করে আসছে।