Published : 22 Aug 2022, 07:00 PM
প্রায় ৩০ বছর পর নিজস্ব কম্পিউটিং চিপের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রসেসর আনার পরিকল্পনা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সংস্থাটির দাবি, বর্তমান স্পেসফ্লাইট কম্পিউটারের চেয়ে একশ গুণ বেশি কম্পিউটিং সক্ষমতা দেবে নতুন এই প্রসেসর।
‘হাই-পারফর্মেন্স স্পেসফ্লাইট কম্পিউটিং (এইচপিএসসি)’ নামে পরিচিত নতুন প্রসেসর তৈরির কাজ পেয়েছে মার্কিন চিপ নির্মাতা ‘মাইক্রোচিপ টেকনোলজি’।
“নাসার স্পেসফ্লাইট কম্পিউটিংয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আপগ্রেড প্রয়োজন, কারণ বিদ্যমান কম্পিউটিং ব্যবস্থাটি প্রায় ৩০ বছর পুরোনো।” --বলেছেন নাসার প্রযুক্তিবিদ ওয়েসলে পাওয়েল।
“ভবিষ্যতে নাসা অভিযানের চাহিদা হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে কম্পিউটিং সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়ানো।”
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘মাইক্রোকন্ট্রোলার’, ‘মিক্সড-সিগনাল’, ‘অ্যানালগ’ এবং ‘ফ্ল্যাশ-আইপি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট’ তৈরিতে বিশেষ পরিচিতি আছে অ্যারিজোনার চ্যান্ডলার শহর ভিত্তিক কোম্পানি মাইক্রোচিপের, যারা এই খাতে কাজ করছে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
প্রকল্পটি কীভাবে কাজ করবে?
আগামী তিন বছর ‘এইচপিএসসি’ প্রসেসর নকশা ও সরবরাহে কাজ করবে মাইক্রোচিপ। ভবিষ্যতে নাসার চন্দ্র ও গ্রহ অনুসন্ধানভিত্তিক অভিযানে এই প্রসেসর ব্যবহারের লক্ষ্যে রয়েছে।
পাঁচ কোটি ডলার মূল্যের একটি চুক্তির অধীনে পরিচালিত হবে এই প্রকল্প, যেখানে প্রকল্পটি শেষ করতে গবেষণা ও উন্নয়ন খরচের বড় একটি অংশ দেবে মাইক্রোচিপ।
টেকরেডারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্ভবত কার্যকরী প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রসেসিং সক্ষমতায় সমন্ময় করার বৈশিষ্ট্য যোগ করবে মাইক্রোচিপের নতুন এই নকশা।
এর মানে, প্রসেসরে কার্যক্রম চলাকালীন কয়েকটি প্রসেসিং ফাংশন ব্যবহৃত না হলে তখন সেগুলো বন্ধ করা যেতে পারে, যা কমিয়ে দেবে বিদ্যুৎ খরচ।
নাসা বলেছে, বিপুল পরিমাণ শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি মহাকাশ অভিযানের সামগ্রিক কম্পিউটিং দক্ষতাকে উন্নত করবে এই প্রসেসর।
নাসা আরও বলছে, পৃথিবীর বাণিজ্যিক ব্যবস্থাতেও ব্যবহার করা যাবে নতুন এই প্রযুক্তি, যেখানে মহাকাশ অভিযানের মতো একই ধরনের কম্পিউটিং সক্ষমতা প্রয়োজন। পাশাপাশি, এই ব্যবস্থার কোনো একটি উপাদান ব্যর্থ হলে নিরাপদে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা থাকার কথাও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
নতুন প্রসেসরের এই সব সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে আছে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন’, ‘ইথারনেট ডেটা ট্রান্সমিশন’, ‘এআই’ এবং ‘ইন্টারনেট অফ থিংস গেটওয়ে’, যা বিভিন্ন যোগাযোগ প্রযুক্তির মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কাজ করবে।
উচ্চ কার্যক্ষমতার কম্পিউটিং ব্যবস্থায় নাসার বিশেষ নজর ছিল আগে থেকেই। তাই নভোযানের নির্দেশ আদান-প্রদানের সময়কাল ঘন্টা থেকে মিনিটে কমিয়ে আনতে সম্প্রতি নিজস্ব একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে মাইক্রোসফটের ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ‘অ্যাজিউর কোয়ান্টাম’-কে নিয়োগ দিয়েছে সংস্থাটি।