Published : 24 Sep 2024, 05:19 PM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় ৮১ বছরের গোয়েন্দা কাজ মাত্র ৩০ ঘণ্টায় করা সম্ভব, এমনই একটি এআই টুল পরীক্ষা করে দেখছে যুক্তরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর মাধ্যমে দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত কয়েকটি মামলা সমাধানের সম্ভাবনাও রয়েছে। এভন ও সমারসেট পুলিশের পরীক্ষা করা এই প্রযুক্তি বিভিন্ন এমন সম্ভাব্য সূত্র শনাক্ত করতে পারে, যেগুলো হয়ত ম্যানুয়াল উপায়ে সম্ভব নয়।
‘সোজ’ নামের টুলটি তৈরি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়, যা একইসঙ্গে ভিডিও ফুটেজ, আর্থিক লেনদেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল ও অন্যান্য অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।
এর মূল্যায়নে দেখা যায়, এটি ২৭টি জটিল মামলার প্রমাণাদি মাত্র ৩০ ঘণ্টায় পর্যালোচনা করতে পেরেছে, যা একজন মানুষের পক্ষে করতে সময় লাগত আনুমানিক ৮১ বছর।
যুক্তরাজ্যের ‘ন্যাশনাল পুলিশ চিফস’ কাউন্সিল’-এর প্রধান গ্যাভিন স্টিফেনস বলেছেন, দেশের সবচেয়ে পুরোনো ও কুখ্যাত মামলা, যেগুলো সমাধান করা সম্ভব হয়নি, সে ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে।
“আমার ধারণা, এ ধরনের প্রযুক্তির সহায়তায় যেসব মামলা চাপা পড়ে গেছে, সেগুলোও পর্যালোচনা করা সম্ভব,” সংবাদ কর্মীদের বলেন তিনি।
“আপনার কাছে হয়ত এমন এক চাপা পড়ে থাকা মামলার রিভিউ আছে, যা এর ভেতরে থাকা বিশাল তথ্যের কারণে দেখা অসম্ভব বলে মনে হয়। তবে, এটি ওই সিস্টেম এমনভাবে খতিয়ে দেখতে পারে, যেখানে আপনি এর একটি মূল্যায়ন পেতে পারেন। আমার কাছে এটা খুবই সহায়ক মনে হয়।”
বিভিন্ন অমীমাংসিত হত্যা মামলায় যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বাহিনীর স্রেফ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা কাজ করছেন, স্কাই নিউজের এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই এ খবর এল। গত সপ্তাহে নিজ বাহিনীকে ‘বিপজ্জনকভাবে বিস্তৃত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মার্ক রাউলি।
এদিকে, ৩০ বছর পুরোনো আটক হুসেন নামের এক ব্যক্তির হত্যা মামলা থেকে সরে যাচ্ছেন মেট্রোপলিটেন পুলিশের বিশেষ একটি বিভাগের পাঁচজন কর্মকর্তা।
১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাজ থেকে ফেরার সময় হৃদযন্ত্রে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন হুসেন। ছুরিকাঘাতের পর তিনি কোনো রকমে তার বাড়িতে পৌঁছে নিজের পরিবারকে বলেছিলেন, আক্রমণকারীরা এশীয় ছিল।
মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে, এ মামলা এখন সক্রিয় না থাকলেও অমিমাংসীত যে কোনো হত্যার তদন্তই কখনও একেবারে বন্ধ হয়ে যায় না। আর হুসেনের এ মামলাটি নিয়ে গেল অগাস্টে সর্বশেষ পর্যালোচনা করেছিল তাদের ‘সিরিয়াস ক্রাইম রিভিউ গ্রুপ’।
স্টিফেন্স বলেন, সোজ টুল এমন ‘ডজনখানেক যুগান্তকারী প্রোগ্রামের একটি’, যা শিগগিরই গোটা যুক্তরাজ্যে চালু হতে পারে।
এর মধ্যে এমন এক এআই টুল আছে, যা বিভিন্ন ছুরির জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে সক্ষম। আর খুচরা বিক্রেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি এতে এমন এক সিস্টেম আছে, যা জরুরী সেবার মাধ্যমে গৃহ নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেয়।
তবে তিনি বলেন, এআই এবং ফেইশল রেকগনিশন ও রোবটিক অটোমেশনের মতো অন্যান্য প্রযুক্তি পুলিশের ‘জায়গা নেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য’ নয়। কারণ কোনো মামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছ থেকেই আসবে।