Published : 23 Sep 2024, 04:02 PM
অবশেষে চাঁদের দূরবর্তী পাশ থেকে সংগ্রহ করা প্রথম নমুনার বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে চীন।
চীনের চ্যাং’ই ৬ মিশনে সংগৃহীত এ নমুনা নিয়ে প্রকাশিত প্রথম গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে, এগুলো চাঁদের সামনের পাশ থেকে সংগ্রহ করা নমুনার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এমনকি এতে চাঁদের বিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন নতুন তত্ত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট স্পেস ডটকম।
মে মাসের শুরুতে ৫৩ দিন দীর্ঘ এক জটিল মিশন চ্যাং’ই উৎক্ষেপণ করে চীন, যার লক্ষ্য ছিল, চাঁদের দূরবর্তী পাশ থেকে নমুনা নিয়ে আসা।
চাঁদ যেভাবে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে তাতে চাঁদের একটি পাশই সবসময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে, ফলে এই পাশটি পৃথিবীর কাছাকাছি থাকে সব সময়। আর অপর দিকটি পৃথিবী থেকে কখনও দেখা যায় না এবং সেটি পৃথিবী থেকে দূরের দিকে থাকে। ওই পাশেই ল্যান্ডার পাঠিয়েছে চীন।
চাঁদের অপর পাশে ‘অ্যাপোলো ক্রেটার’ নামে পরিচিত এক এলাকা থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে ল্যান্ডারটি।
এর পর চাঁদের কক্ষপথে অপেক্ষমান মহাকাশযানে সেইসব নমুনা তোলার পর প্রায় দুই কেজি ওজনের নমুনা নিয়ে জুনের শেষ নাগাদ পৃথিবীতে ফিরে আসে মহাকাশযানটি।
এইসব নমুনা বিশ্লেষণ ও গবেষণার জন্য প্রাথমিকভাবে একটি বিশেষায়িত গবেষণাগারে এগুলো সংরক্ষণ করা হয়। আর এখন বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউ’-এ এর প্রথম গবেষণাপত্র প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে এ মূল্যবান বস্তু সম্পর্কে প্রথম ধারণা মিলল।
লি চুনলাই ও তার সহযোগী গবেষকরা এইসব নমুনার সে অংশ নিয়ে গবেষণা করেছেন, যেগুলো রোবটিক হাতল দিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছিল। এতে তারা দেখেছেন, এর আগে চাঁদের ‘নিয়ার সাইড’ থেকে সংগ্রহ করা নমুনার তুলনায় এদের ঘনত্ব কম।
আরও স্পষ্ট করে বললে, চাঁদের দূরবর্তী পাশ থেকে আনা নমুনা কাছের পাশের নমুনার তুলনায় হালকা ও এর গঠনপ্রক্রিয়ায় ছিদ্র থাকার প্রবণতা বেশি।
গবেষকরা লিখেছেন, নমুনাটি বেশ ঢিলেঢালা ও চাঁদের পৃষ্ঠে নিজের ‘প্রাকৃতিক’ অবস্থায় এটি আরও তুলতুলে।
“এমন নতুন বোঝাপড়া থেকে চাঁদের ইতিহাস ও বিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন নতুন ধারণা ও তত্ত্ব পাওয়া যেতে পারে,” গবেষণাপত্রের শেষ অংশে লেখেন গবেষকরা।
চ্যাং’ই ৬ মিশনের বিভিন্ন নমুনা নিয়ে পাওয়া নতুন তথ্য অদূর ভবিষ্যতে চীনের অন্যান্য গবেষকদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আন্তর্জাতিক গবেষকদের এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে দুই বছর।