Published : 03 Jun 2024, 01:34 PM
শার্লট নামে পরিচিত স্টিংরে প্রজাতির মাছ শার্লট কিছুদিন আগেই খবরের শিরোনাম হয়েছিল ‘ভার্জিন’ অবস্থাতেই ‘গর্ভবতী’ হওয়ার কারণে। সেই শার্লট আদতে গর্ভবতী নয়, বরং ‘বিরল প্রজনন রোগে’ আক্রান্ত বলে এবার জানিয়েছে নর্থ ক্যারোলাইনা অ্যাকুয়ারিয়াম।
শার্লট-এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এক নতুন আপডেটে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ‘অ্যাকুয়ারিয়াম অ্যান্ড শার্ক ল্যাব’ বলেছে, শার্লট ‘এক বিরল প্রজনন রোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং তার প্রজননতন্ত্রে সমস্যা তৈরি করেছে’।
এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে শার্লট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠে যখন নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাকুয়ারিয়ামটি জানায়, আট বছর ধরে কোনও পুরুষ সঙ্গীর সংস্পর্শে না এসেও শার্লট সম্ভবত ‘তিন থেকে চারটি বাচ্চা’ বহন করছে।
নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাকুয়ারিয়ামের নির্বাহী পরিচালক ব্রেন্ডা রেমার শার্লটের আল্ট্রাসাউন্ড করার সময়ও বলেছিলেন - “এটি সত্যিই একটি অদ্ভুত ও বিস্ময়কর ঘটনা।”
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা আপডেটে অ্যাকুয়ারিয়াম কর্তৃপক্ষ বলেছে, “অনেকে শার্লটের প্রজনন রোগেটির নাম ও বিস্তারিত জানতে চাইছেন, তবে কেবল একে বলা যাচ্ছে এটি এক ধরনের প্রজননজনিত রোগ।”
“আমরা আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছি।”
এদিকে, গবেষণা দলটি বলেছে, তারা বিভিন্ন প্রজাতির স্টিংরে মাছ নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে, এমন গোলাকার শার্লটের প্রজাতির উপর আগে কখনও গবেষণা হয়নি।
শার্ক তত্ত্ব খারিজ
শার্লটের গর্ভাবস্থার বিষয়টি আবিষ্কারের আগে অ্যাকুয়ারিয়ামের কর্মীরা দাবি করেছিলেন, শার্লটের দেহ ‘ফুলে ওঠা’র কারণ সম্ভবত ক্যান্সার। তবে, শিগরিরই তারা অনুমান করেন শার্লট গর্ভবতী।
এরপর হাজার হাজার মানুষ শার্লটের গর্ভধারণ কীভাবে হয়েছিল সে সম্পর্কে নিজেদের বিভিন্ন তত্ত্ব দিতে শুরু করেন। কেউ কেউ বলেন, ট্যাংকে বাস করা একটি পুরুষ শার্কের মাধ্যমে শার্লট গর্ভবতী হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এসব উড়িয়ে দেন।
“পুরুষ শার্কের অঙ্গসংস্থান মূলত গোলাকার নারী স্টিংরের অঙ্গসংস্থানের সঙ্গে খাপ খায় না,” বলেছেন ‘ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’-এর জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বেঞ্জামিন পার্লম্যান।
এদিকে রেমার বলেছেন, তার দাবি, শার্লট পার্থেনোজেনেসিসের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়েছে। পার্থেনোজেনেসিস মানে হচ্ছে, একটি নারী মাছের ডিম নিজের কোষের মাধ্যমেই নিষিক্ত হয়ে থাকে।
আর এমনটা যদি হয়, তবে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাকুয়ারিয়াম অনুসারে, শার্লট সম্ভবত কেবল নারী মাছই জন্ম দিতে পারবে। কারণ শার্লটের বাচ্চারা তারই ক্লোন হবে।
‘অসম্ভব নয়’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা ধরনের পোস্টের জবাবে রেমার বলেছেন, “তবে, কিছু ঘটেনি বা নথিভুক্ত করা হয়নি বলেই যে এটি অসম্ভব, তা কিন্তু নয়।”
শার্লটের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। একে আট বছর আগে নর্থ ক্যারোলােইনার শার্লট শহরের বাইরে একটি বসত বাড়ি থেকে আনা হয়েছিল।
অ্যাকুয়ারিয়ামের কর্মকর্তারা তখনই ধরে নেন, শার্লট ডিসেম্বর থেকে দেহে ডিম বহন করছে।
“শার্লট অবশ্যই নিজের দেহে অনেক ডিম বহন করছে,” বলেছেন নর্থ ক্যারোলাইনার ‘অ্যাকুয়ারিয়াম অ্যান্ড শার্ক ল্যাব’-এর সহকারি পরিচালক কিন্সলে বয়েট।
মানুষ যেভাবে সন্তান পেটে ধারণ করে, তেমনি স্টিংরে তার সন্তানদের বহন করে তাদের পিঠে।
“আমরা লক্ষ্য করেছি, শার্লট বালির নিচে নিজেকে পুরোপুরি নিবিষ্ট করতে পারেনি এবং এর ফলেই আমরা বুঝতে পারি যে, মাছটির আল্ট্রাসাউন্ড করতে হবে।”
কয়েক মাস জল্পনা-কল্পনার পরে এখন গোটা বিশ্বে শার্লটের ভক্তরা তার স্বাস্থ্যের আপডেট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।