Published : 21 Feb 2025, 03:20 PM
কয়েক দশক নয়, বরং কয়েক বছরের মধ্যে শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার আসছে বলে দাবি করেছে মাইক্রোসফট।
‘মাজোরানা ১’ নামের এক নতুন চিপ উন্মোচন করেছে মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্টটি। কোম্পানিটি বলেছে, এর মাধ্যমে “কয়েক বছরের মধ্যে শিল্প পর্যায়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারে” এমন কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করবে তারা।
এটি কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের সর্বশেষ উন্নয়ন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। নতুন প্রযুক্তিটি কণা পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন নীতি ব্যবহার করে নতুন ধরনের একটি কম্পিউটার বানাবে, যা প্রচলিত বা সাধারণ কোনও কম্পিউটার সমাধান করতে পারে না এমন সব হিসাব সমাধান করবে।
বাস্তববিশ্বের নানা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন কিছু বিশেষজ্ঞ। তাদের ধারণা, এখনও কয়েক দশক সময় লাগবে শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানাতে।
মাইক্রোসফট বলেছে, ‘টপোলজিক্যাল কন্ডাক্টর’ নামের নতুন এক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে ‘মাজোরানা ১’ নামের নতুন চিপ তৈরিতে ‘রূপান্তরমূলক’ অগ্রগতির কারণে কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানানোর সময় কমিয়ে আনা যেতে পারে।
‘টপোকন্ডাক্টর’টি কম্পিউটিংয়ের ইতিহাসে সেমিকন্ডাক্টরের মতো যুগান্তকারী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন এই প্রযুক্তি কোম্পানিটি।
এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নতুন গবেষণার তাৎপর্য ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের ওপর এর প্রভাব পুরোপুরি মূল্যায়ন করার জন্য আরও তথ্যের প্রয়োজন।
শীর্ষস্থানীয় চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার প্রধান জেনসেন হুয়াং জানুয়ারিতে বলেছিলেন, ২০ বছরের মধ্যে ‘খুবই কার্যকর’ কোয়ান্টাম কম্পিউটার আসবে।
মাইক্রোসফটের কোয়ান্টাম হার্ডওয়্যারের টেকনিক্যাল ফেলো চেতন নায়ক বলেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রচলিত চিন্তাধারাকে নাড়িয়ে দেবে চিপের এমন সব উন্নয়ন।
তিনি বলেছেন, “অনেকের ধারণা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং অর্থাৎ কার্যকর কোয়ান্টাম কম্পিউটার আসতে এখনও কয়েক দশক সময় লাগবে। তবে আমি মনে করি, কয়েক বছরের মধ্যেই এগুলো আমরা হাতে পাবো।”
মাইক্রোসফট এখন আরও দ্রুত প্রোটোটাইপ সরবরাহ করবে বলে একমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি’র ‘কোয়ান্টাম সায়েন্স সেন্টার’-এর পরিচালক ট্র্যাভিস হাম্বল। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কি?
বিবিসি লিখেছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এমন ধরনের হিসাব করতে পারে, যা বর্তমানে বাজারে পাওয়া বিভিন্ন প্রচলিত কম্পিউটার করার জন্য লাখ লাখ বছর সময় নেবে। পাশাপাশি চিকিৎসা, রসায়ন ও অন্যান্য ক্ষেত্রের বিভিন্ন আবিষ্কারের পথ উন্মোচন করবে এই কম্পিউটার।
এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা রয়েছে, যা প্রচলিত কম্পিউটার সমাধান করতে পারে না। তবে এসব সমস্যার সমাধান মিলতে পারে বিভিন্ন কোয়ান্টাম মেশিনে, যা নতুন ওষুধ তৈরিতে বা আরও ভাল ব্যাটারি ডিজাইন করে নতুন আবিষ্কারের দুয়ার খুলে দেবে।
বর্তমানে এসব সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির জন্য কয়েকশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করছে সিলিকন ভ্যালির টেক জায়ান্টটি’সহ বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানি।
তবে এ প্রতিযোগিতায় মাইক্রোসফট নিজের বেশিরভাগ প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ‘মাজোরানা ১’ নামের এক নতুন চিপ তৈরির কারণে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।