Published : 31 Dec 2024, 04:48 PM
গত শতাব্দীর শেষ নাগাদ বিশেষজ্ঞরা আসন্ন ২০০০ দশককে এমন এক সময় হিসাবে দেখছিলেন যেখানে প্রযুক্তি বিপ্লবের ফলে ব্যাপকভাবে বদলে যাবে গোটা বিশ্ব। কিন্তু কী কী ছিল সে সব অনুমান।
কীভাবে কম্পিউটার ডিভাইস দৈনন্দিন জীবনের কেন্দ্রেই শুধু থাকবে না সব সময় সঙ্গে রাখার মতো যথেষ্ট ছোট এবং বহনযোগ্য হয়ে উঠবে সেটি ছাড়াও বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন ভবিষ্যদ্বাণী নানাভাবেই অনেক সময় সফল হয়েছে বা হয়নি।
কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর জন্য করা সব ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক হয়নি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
১৯৯৯ সালের এমন এক ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, প্রতিটি বাড়িতে তথাকথিত “স্মার্ট বক্স” রাখা হবে, এটি লক করা এবং ফ্রিজারওয়ালা এক বাক্স যা প্রতিটি বাড়ির সদর দরজার বাইরে থাকবে এবং পচনশীল পণ্য ডেলিভারি এলে সেগুলো এ বাক্সে সংরক্ষণ করা যাবে।
অনেক জায়গায় ডেলিভারি লকার বা পিক আপ পয়েন্ট এখন নিয়মিত বিষয় হলেও, ডেলিভারির গতি এবং পচনশীল পণ্য ঠাণ্ডা রাখার উপায় কত দ্রুত তৈরি হবে সেটি অনুমান করতে ব্যর্থ হয় এ ভবিষ্যদ্বাণী।
বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার হওয়ার আগে জেফ বেজোস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, একুশ শতকের গোড়ার দিকে খাবার প্লেট থেকে পোশাক এমনকি ওষুধের প্যাকেজিংসহ সব কিছুতেই কম্পিউটার চিপ থাকবে। পাশাপাশি, ডেটা বিশ্লেষণ করে এসব ডিভাইস জানাতে পারবে ব্যবহারকারীদের খাবার কতটা স্বাস্থ্যকর বা কী ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত।
১৯৯৯ সালে সিক্সটি মিনিটস অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন, কম্পিউটারগুলো একসময় মানুষের মতো কাজ করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে যাবে এবং এমন এক সময় আসবে যখন ফোন কলের সময় বোঝা যাবে না কলটি কোনো মানুষ করেছে নাকি কম্পিউটার। সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি উত্থানের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন তিনি যা ২০২০ এর দশক থেকে শুরু হয়েছে।
শতাব্দীর শুরু থেকে আরেকটি ভবিষ্যদ্বাণী ছিল ‘কম্পিউটার চশমা’ সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে কারণ ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো আকারে ছোট হতে থাকবে।
গুগল গ্লাস পুরোপুরি বাজারে আসার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু চশমার মধ্যে কম্পিউটার ডিভাইস জুড়ে দেওয়ার প্রবণতা নিশ্চিতভাবে ২০২৫ সালে অব্যাহত থাকবে। ফেইসবুকের মালিক কোম্পানি মেটা প্রজেক্ট ওরিয়ন নিয়ে আরও কাজ করবে বলে ধারণা প্রকাশ পেয়েছে। সার্চ জায়ান্ট গুগলও আরেক জোড়া স্মার্ট চশমা উন্মোচনের পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
শুধু গ্যাজেট নয়, ১৯৯৯ সালে মার্কিন সাময়িকী ওয়্যার্ড-এর প্রবীণ কর্মকর্তারা ২১ শতকের প্রযুক্তি খাতের আরেকটি বিষয় সঠিকভাবে অনুমান করেছিলেন। মেধা সত্ত্ব, পেটেন্ট ও প্রতিযোগিতা বিষয়ক সমস্যা বাড়বে এবং এ ধরনের মামলার সংখ্যাও বাড়বে।
সাম্প্রতিক কিছু বছরে জেনারেটিভ এআই চালু হওয়ার কারণে এআই মডেলগুলোকে প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত কপিরাইটওয়ালা কনটেন্ট বিষয়ক মামলা অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি, এ খাতে একচেটিয়া আধিপত্যের অভিযোগে শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছে তুলনামূলকভাবে ছোট কোম্পানিগুলো।