Published : 31 Dec 2023, 09:12 PM
শনির দৃষ্টিনন্দন বলয়ের অদ্ভুত একটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে অনুসন্ধান করছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ।
ছবিতে হতে পারে বলয়টি বোধহয় মসৃণ, আদতে তা নয়। সেটির মধ্যে নির্দিষ্ট সময় পর পর বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয় রহস্যময় ফাঁকা স্থান যা কয়েক আবর্তনের পর মিলিয়ে যায়, জোতির্বিজ্ঞানীরা যেগুলোর নাম দিয়েছেন স্পোকস।
ভয়েজার ২ মহাকাশযানটি ৪০ বছরের আগে সর্বপ্রথম শনির বলয়ের এই স্পোকগুলোকে শনাক্ত করলেও প্রতিনিয়ত সামনে আছে এদের নতুন সব রহস্য। গ্রহটির ঋতু পরিবর্তন, পৃথিবীর সাত বছরে হিসাবে গ্রহটির এক বার্ষিক চক্র এবং চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে স্পোকগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাময়িকী ডিজিটাল ট্রেন্ডস।
হাবল টেলিস্কোপটি তাদের আউটার প্ল্যানেটস অ্যাটমোস্ফিয়ারস লিগেসি (ওপাল) প্রকল্পের আওতায় স্পোকগুলোর গতিপথ অনুসরণ ও পর্যবেক্ষণ করেছে। অক্টোবরে ধারণ করা নতুন ছবি প্রকাশ করেছে হাবল, তাতে স্পোকগুলোকে গাঢ় ছোপ ছোপ আকারে দেখা যায়।
স্পোকগুলো পর্যবেক্ষণের এখন একটি ভাল সময়, কারণ ২০২৫ সালে মে তে শনি গ্রহটি শরৎকালীন ঝড় বা ইকুইনক্সের মুখে পড়বে। ইকুনক্সের আগে এবং পরে স্পোকসের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, গবেষকরা বের করেছেন তাদের অতীতের পর্যবেক্ষণে। “আমরা শনির ইকুইনক্সের দিকে এগোচ্ছি, সে সময়টায় সর্বাধিক সংখ্যক এবং ঘনঘন স্পোকসের আবির্ভাব হবে সামনের কয়েকটা বছরে” – এক বিবৃতিতে ব্যাখ্যা করেন ওপাল কার্যক্রমের প্রধান বিজ্ঞানী ও নাসার গোডার্ড স্পেস ফ্লাইট কেন্দ্রের এমি সিমন।
যদিও বিজ্ঞানীরা গ্রহটির ঋতু পরিবর্তন এবং স্পোকসের মধ্যে সম্পর্ক পর্যবেক্ষণ করেছেন, তবে পুরো প্রক্রিয়াটি এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে। এই স্পোকগুলোর আকৃতি বিশাল, গ্রহটির দুই পাশ থেকে উদ্ভব ঘটে পুরো বলয়জুড়ে ছড়িয়ে থাকে, এবং কখনও কখনও এদের আকৃতি পৃথিবীর ব্যাসের চেয়েও বেশি হতে পারে। দীর্ঘদিন যাবত বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে আসছেন এগুলোর সঙ্গে সৌর ঝড় এবং গ্রহটির চৌম্বক ক্ষেত্রের পারস্পরিক পতিক্রিয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
“সর্বাধিক প্রচলিত তত্ত্বটি হচ্ছে, শনি গ্রহের শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে স্পোকগুলোর সম্পর্ক রয়েছে, এবং চৌম্বক ক্ষেত্রটির সঙ্গে সূর্যের কোনো প্রতিক্রিয়ায় এই স্পোকগুলোর সৃষ্টি হয়,” ব্যাখ্যা করেন সিমন।
কিন্তু ঠিক কখন এবং কোথায় এই স্পোকগুলোর উদয় হবে, আগে থেকে তা নির্ধারণ করা দুষ্কর। তাই বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণের জন্য সামনের ইকুইনক্সের সময়টাতে বিজ্ঞানীরা হাবল টেলিস্কোপটির ব্যবহার করবেন।