Published : 16 Jun 2025, 12:00 PM
ইসরায়েলি হামলার মধ্যে থাকা অবস্থায় অস্ত্রবিরতি নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনায় ইরান রাজি নয় বলে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা কাতার ও ওমানকে তেহরান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
এ কূটনৈতিক যোগাযোগ সম্বন্ধে অবহিত এক কর্মকর্তা রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ খবর দিয়েছেন।
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা এবং সামরিক নেতৃত্ব ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের ওপর শুক্রবার ইসরায়েলের আচমকা হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দুই দেশ গত তিন দিন ধরে একে অপরের সামরিক ও বেসামরিক অসংখ্য স্থাপনায় পাল্টাপাল্টি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি সামলাতে পরাশক্তিগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশও যে তৎপর হয়ে উঠেছে, রয়টার্সের এ খবরেই তা প্রতীয়মান হচ্ছে।
“ইসরায়েলের আগ্রাসী হামলার জবাব দেওয়া শেষ হলেই কেবল ইরান গুরুতর আলোচনায় বসতে পারে, কাতারি ও ওমানি মধ্যস্থাতাকারীদেরকে ইরান এ কথাই বলেছে,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তেই কথা বলতে রাজি হন তিনি।
এ কর্মকর্তা বলেন, “ইরান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, হামলার মধ্যে থাকা অবস্থায় কোনো ধরনের আলোচনা করবে না তারা।”
শুক্রবার থেকে চালানো হামলায় ইসরায়েল এরই মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বের শীর্ষ অংশকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে এবং শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির একাধিক পারমাণবিক স্থাপনার মাটির উপরে থাকা অংশ গুড়িয়ে দিয়েছে।
সর্বশেষ তাদের হামলায় ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি, তার সহকারী হাসান মোহাকেক ও কমান্ডার মহসেন বাকেরির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা তাসনিম।
হামলার মাত্রা সামনে আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছে তেল আবিব।
ইরানও পাল্টা আঘাতে ইসরায়েলের জন্য ‘নরকের দরজা খুলে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছে।
এর মাঝেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে—যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে একটি অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছাতে এবং ওয়াশিংটন-তেহরান নতুন করে পরমাণু আলোচনা শুরু করতে ইরান ওমান ও কাতারকে অনুরোধ জানিয়েছে।
কিন্তু এ গুঞ্জন যে মোটেই সত্যি নয়, তা নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।
কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে মন্তব্য চেয়েও জবাব পায়নি রয়টার্স। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ওমানের তথ্য মন্ত্রণালয়ও এ প্রসঙ্গে কিছু বলেনি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ওমানকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে দেখা গেছে। রোববার তেহরান-ওয়াশিংটন ষষ্ঠ দফার আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোয় তা ভেস্তে যায়।
কাতারও এর আগে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নানান ধরনের বিবাদ মীমাংসায় ভূমিকা রেখেছিল। সর্বশেষ ২০২৩ সালে দুই পক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময়ে মধ্যস্থতা করেছিল দোহা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয়ের সঙ্গেই কাতার ও ওমানের সম্পর্ক বেশ ভালো। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশদুটির সঙ্গে ইসরায়েলেরও সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।