Published : 02 Jun 2025, 05:17 PM
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও সদ্য স্নাতকদের কাছে অনেকদিন ধরেই পছন্দের ‘সাবজেক্ট’ বা পাঠ্যবিষয়, তা সত্ত্বেও কম্পিউটার সায়েন্স পড়ুয়াদের মধ্যে বেকারত্বের হার সব বিষয়ের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বেকারত্বের হার বেশি এমন স্নাতক পাঠ্যবিষয়ের মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্সের অবস্থান সপ্তম, এতে বেকারত্ব ৬ দশমিক ১ শতাংশ বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক।
“ল্যাপটপ হাতে থাকা সব শিশুই নিজেকে পরবর্তী জাকারবার্গ ভাবে, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই কাগজের ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পায় না,” এক বিশেষজ্ঞ মার্কিন গণমাধ্যম নিউজউইককে এমনটাই বলেছেন।
সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় প্রযুক্তি খাতের যে উল্লম্ফন দেখা গেছে, তার প্রভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠ্যবিষয় হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্সের চাহিদা বেড়ে যায়।
অন্যদিকে লাভ বাড়াতে আমাজন ও গুগলের মতো বড় বড় টেক কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করায় যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারে এই ‘সাবজেক্টের’ কাটতি খানিকটা কমেও গেছে।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যবিষয় নিয়ে প্রিন্সটন রিভিউ’র তালিকায় কম্পিউটার সায়েন্স এক নম্বরে স্থান পেলেও প্রযুক্তি খাত যে স্নাতক উত্তীর্ণদের প্রত্যাশার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে না তা এতেই বোঝা যাচ্ছে।
এই পাঠ্যবিষয়ে বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ, বলছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক; এর উপরে আছে পদার্থবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানের মতো কয়েকটি বিষয়। পদার্থে বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, আর নৃবিজ্ঞানে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের তালিকায় এর অবস্থান তৃতীয়। এতেই বোঝা যাচ্ছে চাকরির বাজারে কম্পিউটার সংক্রান্ত বিষয়গুলোর অবস্থা কতটা শোচনীয়।
অন্যদিকে পুষ্টিবিজ্ঞান, নির্মাণ পরিষেবা এবং পুরকৌশল বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয় পড়ুয়াদের মধ্যে বেকারত্বের হার অনেক কম, শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ১ শতাংশের ভেতর।
এসব তথ্য নেওয়া হয়েছে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে, যা তৈরি হয়েছে ২০২৩ সালের আদমশুমারির তথ্য ও সাম্প্রতিক স্নাতক পাসদের বেকারত্বের হারকে কেন্দ্র করে।
কম্পিউটার সায়েন্সের অনেক পদের পেছনে এখন হাজার হাজার স্নাতক পাস ছুটছেন; কিন্তু এই চাকরির জন্য এখন বছরের পর বছর কাজের অভিজ্ঞতা, আকর্ষণীয় গিটহাব প্রোফাইল ও কম বেতনে কাজ করার সক্ষমতা থাকা লাগবে, বলছেন মানবসম্পদ বিষয়ক পরামর্শক ব্রায়ান ড্রিসকল।
“সমস্যাটা আসলে ব্যবস্থার। আমরা অতিরিক্ত ডিগ্রি দিচ্ছি, কিন্তু প্রযুক্তিখাতে নিয়োগ যে কতটা শোষণমূলক ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠছে, সেটা নিয়ে ভাবছি না। এন্ট্রি লেভেলের চাকরি হারিয়ে যাচ্ছে, বেতন ছাড়া ইন্টার্নশিপ এখনও প্রচুর, এদিকে স্নাতক পাসদের যেসব কাজের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, কোম্পানিগুলো সেগুলো হয় বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনায় করে ফেলছে,” বলেছেন তিনি।