Published : 07 Mar 2025, 12:07 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নেটো জোটের মিত্রদের সতর্ক করে বলেছেন, যদি তারা নিজেদের প্রতিরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যয় না করে তাহলে ওয়াশিংটন তাদের সুরক্ষা দিতে পারবেনা।
“এটা তো কমন সেন্স, তাই না। যদি তারা খরচ না করে আমি তাদের সুরক্ষা দিতে যাবো না। না, আমি সুরক্ষা দিবো না,” বৃহস্পতিবার তিনি ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ট্রাম্প জানান, নেটো নিয়ে তার এমন দৃষ্টিভঙ্গি অনেক বছরের, এবং তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের প্রথম মেয়াদে তার এ দৃষ্টিভঙ্গি নেটো মিত্রদের সঙ্গে শেয়ারও করেছেন।
সেই কারণেই ৭৫ বছর পুরনো ট্রান্সআটলান্টিক জোটের অন্য সদস্যরা প্রতিরক্ষায় ব্যয় বাড়িয়েছে, যদিও এখনও তা পর্যাপ্ত নয়, বলেছেন তিনি।
“তাদের আরও খরচ করা উচিত,” বলেছেন এ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা নিজেদের ভূখণ্ডে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্ভাব্য হামলার ঝুঁকি মোকাবেলায় যে প্রতিরক্ষা জোট গড়েছিল, সেই নেটোর প্রাণই হচ্ছে একে অপরের সহায়তায় দ্ব্যর্থহীনভাবে এগিয়ে আসা।
যুক্তরাষ্ট্রই এ জোটের মাথা, সবচেয়ে বেশি ব্যয়ও তারাই করে। কিন্তু ট্রাম্প তার গত মেয়াদ থেকেই এই ব্যয়ভার খানিকটা ইউরোপীয় মিত্রদের কাঁধে চাপিয়ে দিতে চাইছেন।
নেটো নিয়ে তার সর্বশেষ এ মন্তব্য ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্রদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
দীর্ঘদিনের মিত্র ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বাকবিতণ্ডা, একইসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ দেখে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তা আগের মতো বহাল থাকে কিনা, তা নিয়ে মহাদেশটির অনেক নেতাই এখন উদ্বিগ্ন।
ট্রাম্পের মন্তব্যের আগেই বৃহস্পতিবার ইউরোপের নেতারা নিজেদের প্রতিরক্ষায় আরও খরচ বাড়ানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইউক্রেইনের পাশে থাকার অঙ্গীকারও।
“আমি জানি কারও কারও মধ্যে নেটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ আছে। তাই আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ক ও ট্রান্সআটলান্টিক অংশীদারিত্ব আমাদের জোটের ভিত্তি হিসেবেই আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নেটো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ব্যক্তিগত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন, এখানে এই প্রত্যাশাও স্পষ্ট হয়েছে যে ইউরোপে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি কিছু করতে হবে,” বলেছেন নেটো মহাসচিব মার্ক রুটে।
অন্যদিকে ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেছেন, নেটো সদস্যরা মিত্র ঠিকই, কিন্তু সঙ্কটজনক মুহূর্তে ফ্রান্স এবং অন্যরা কি যুক্তরাষ্ট্রকে সুরক্ষা দিতে পারবে?
“তারা এসে আমাদের সুরক্ষা দেবে বলে মনে করেন আপনারা? তাদের তো করারই কথা, যদিও আমি ঠিক নিশ্চিত নই,” বলেছেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের এক বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে আল-কায়েদার হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে ফ্রান্স এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের বাহিনীও যোগ দিয়েছিল।
“আফগানিস্তানে যখন ডাক পড়েছিল, তখন কেবল ফরাসীরাই নয়, অন্য ইউরোপীয়রাও সেখানে হাজির হয়েছিল। যদিও ছাড়ার সময় তাদের ভালোভাবে সতর্ক করা হয়নি। আমরা অনুগত ও বিশ্বস্ত মিত্র,” বলেছেন ম্যাক্রোঁ।