Published : 26 Feb 2025, 02:25 PM
ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত হওয়া নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, তার সুরাহা হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস।
সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটির কায়রো সফরে যাওয়া একটি প্রতিনিধি দল এ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে তারা।
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে চলমান বন্দি বিনিময়ের মধ্যেই ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরের পাশাপাশি একযোগে এ কারাবন্দিরা মুক্তি পাবেন, বিবৃতিতে হামাস এমনটাই বলেছে বলে এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি এ স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, তাদের গাজাপ্রধান খলিল আল-হায়ার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘প্রতিটি পর্ব, প্রতিটি ধারাসহ’ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
“প্রথম ধাপের সমঝোতা অনুযায়ী ইসরায়েলি বন্দিদের (জিম্মি) মরদেহ হস্তান্তরের পাশাপাশি একযোগে তাদেরও (ফিলিস্তিনি কারাবন্দি) মুক্তি মিলবে, সঙ্গে ছাড়া পাবেন আটক ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুরাও,” বলেছে হামাস।
গত কয়েকদিন ধরে ৬০০ ফিলিস্তিনির মুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের টালবাহানায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল; হামাস গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরকে ‘পাবলিক শো’ বানিয়ে চুক্তি ভঙ্গ করছে অভিযোগ করে তেল আবিব এ মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছিল।
হামাসের মঙ্গলবারের বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই কেটেছে।
তবে ইসরায়েলের দিক থেকে এখনো ৬০০ ফিলিস্তিনির মুক্তি নিয়ে কোনো অবস্থান বা হামাসের বিবৃতির কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তারা আরও ৬৩ জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গাজা যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনব্যাপী প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন।
ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা পরে করা যাবে, বলছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায়, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গত মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে তার প্রথম এ ধাপটি শনিবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর কী হবে তা এখনও অজানা।
হামাসের কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, কারাবন্দিদের আটকে রেখে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।
রয়টার্স লিখেছে, ৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক দুই হাজারের মতো ফিলিস্তিনি বন্দি ও কয়েদিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে আংশিক সেনাপ্রত্যাহারের শর্তে হওয়া চুক্তির প্রথম ধাপ বেশ কয়েকটি বাধা-বিপত্তির পরও টিকে আছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় হাজারের বেশি নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করার প্রতিক্রিয়ায় তেল আবিব গাজায় সর্বাত্মক আক্রমণে নামে।
তাদের সোয়া এক বছরের টানা হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
ইসরায়েল এখন বলছে, তারা গাজার শাসনব্যবস্থায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা হামাসকে কোনো ভূমিকাতেই দেখতে চায় না।
হামাস বলছে, গাজায় তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকতেই হবে এমন দাবি তারা করছে না, কিন্তু যা-ই হবে তা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।
ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠী ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করে আসছে।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করেছে ইসরায়েল