Published : 15 Feb 2024, 02:11 PM
পাকিস্তানে সদ্য সমাপ্ত প্রাদেশিক নির্বাচনে ভোট কারচুপি করে তাকে জেতানো হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে করাচির একটি আসনের বিজয়ী প্রার্থী জামাত-ই-ইসলামি পার্টির নেতা হাফিজ নাঈম উর রেহমান সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
বিবিসি জানায়, তিনি প্রাদেশিক নির্বাচনে করাচির পিএস-১২৯ আসন থেকে ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কারাবন্দি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন এবং চারটি প্রদেশে প্রাদেশিক নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফলাফলে পিএস-১২৯ আসন থেকে হাফিজকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু এ সপ্তাহে হাফিজ দাবি করেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তার থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন। কিন্তু পরিসংখ্যানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট কম দেখিয়ে তাকে বিজয়ী করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি ২৬ হাজারের কিছু ভোট বেশি পেয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফ বারি ৩১ হাজার ভোট পেয়েছেন। কিন্তু তালিকায় সাইফ মাত্র ১১ হাজার ভোট পেয়েছেন বলে দেখানো হয়েছে। এভাবে কারচুপি করে তাকে জেতানো হয়েছে। যেটা তিনি মেনে নেবেন না বলে নিজের আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
তার আগে সোমবার দলীয় এক সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ বলেছিলেন, “যদি কেউ অবৈধ উপায়ে আমাদের বিজয়ী করতে চায়, আমরা সেটা গ্রহণ করবো না।
“জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান জানানো উচিত এবং জয়ীকে জয়ী হতে এবং পরাজিত কে পরাজিত বলতে হবে। কাউকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া উচিত না।”
বিবিসি জানায়, হাফিজের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। পিএস-১২৯ আসনের কি হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না তারা।
হাফিজের এই ঘটনা পাকিস্তানের নির্বাচনে ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে ওঠা প্রশ্নকে আবারও সামনে তুলে এনেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটের ফলাফলের স্বচ্ছতা নিয়ে আগেই সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে।
ইমরান ও তার দলকে আটকাতে কি না করা হয়েছে। একের পর এক মামলা দিয়ে প্রথমে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তারপর সেগুলোর রায়ে দণ্ড দিয়ে তাকে কারাবন্দি করা হয়। এমনকি, দণ্ডপ্রাপ্ত বলে তাকে নির্বচানে অংশগ্রহণ করতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। শুধু ইমরানকে নয় বরং তার দলের আরো জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা কারাবন্দি আছেন। কেউ কেউ চাপে পড়ে দলত্যাগ করেছে, কেউ কেউ গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
নির্বাচনে পিটিআই কে দলীয় প্রতীক ‘ব্যাট’ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে পিটিআই নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিতে হয়েছে।
পিটিআই কে আটকাতে এত কিছু করা হলেও জন রায় তাদের পক্ষেই গেছে। জাতীয় পরিষদে ২৬৫ আসনের মধ্যে ৯৩টি পেয়েছেন পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা। নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৭৫টি এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পিপিপি ৫৪ আসনে জয়লাভ করেছে।
কিন্তু পাকিস্তানের আইন অনুসারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারবে না। পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট সরকার গঠনের পথে হাঁটছে।
এদিকে, পিটিআই থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, যদি ভোট কারচুপি করা না হতো তবে তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা আরো বেশি আসনে জিততো।