০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২
লেখক ও শিক্ষক। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব জেনারেল এডুকেশনের সহকারী অধ্যাপক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। আইসিসিআর স্কলার হিসেবে ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি, গবেষণার শিরোনাম: 'ন্যাশনালিস্ট হেজিমনি ইন অ্যাকাডেমিক কালচার অব প্রি-ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট: এ স্ট্যাডি অন বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান'।
জামুকা সংশোধনী অধ্যাদেশ ঘিরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বীকৃতি এবং সম্মান নিয়ে শুরু হয়েছে বহুমাত্রিক বিতর্ক। গণমাধ্যম কতটা পূর্বানুমান করেছে, আর কতটা বাস্তবতা তুলে ধরেছে—এই প্রশ্ন ঘিরেও চলছে আলোচনা।
মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা যেন এক পরিবর্তনশীল আয়না—যেখানে বারবার প্রতিফলিত হয়েছে রাজনৈতিক সুবিধা, আদর্শের দ্বন্দ্ব আর ইতিহাসের অসম্পূর্ণতা। ১৯৭২ থেকে ২০২৫—প্রতিটি সংশোধন যেন একেকটি অধ্যায়, যেখানে ধোঁয়াশা তৈরি করাই নিয়ম, যেখানে সত্য উপেক্ষিত। জামুকার সাম্প্রতিক অধ্যাদেশ সেই দীর্ঘ কাহিনির আরেকটি প্রবল অথচ প্রশ্নবিদ্ধ অনুচ্ছেদ।
সংজ্ঞা বদলালে ইতিহাস বদলায় না—তবু রাষ্ট্র যখন বাছাই করে ইতিহাস, তখন প্রশ্ন ওঠে: কারা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, আর কারা হয়ে যান শুধু ‘সহযোগী’?
কোন বাছবিচার ছাড়াই তৈরি হয়েছে পাইকারি দঙ্গল এবং কান-কথায় বিশ্বাসীদের সমাবেশ। বেড়েছে আবেগসর্বস্ব রবীন্দ্রবিরোধিতা। ধরাশায়ী হচ্ছেন তিনি নানা তরিকায়। তাকে উগ্রপন্থায় নিষিদ্ধ করার প্রাণান্ত চেষ্টাও চলছে।
রাষ্ট্র বনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনার জন্ম হয়েছে কিংবা অদূর ভবিষ্যতেও হবে, সেটিকে হোয়াইট হাউস বনাম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বিরোধ হিসেবে দেখাই সঙ্গত হবে।
একটি অসরকারি-অরাষ্ট্রীয় উদ্যোগে, তা-ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদের আয়োজনে সরকার কেন হস্তক্ষেপ করতে মরিয়া হয়ে উঠল? কোন অনুপ্রেরণায়? কার বা কাদের প্ররোচনায়? নিজের মনে যা চাইল, ইতিহাসের বাছবিচার না করে তা-ই চাপিয়ে দেওয়ার নাম কি গণতন্ত্র? এজন্য গণমানুষ একটা রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দিয়েছিল?