Published : 12 May 2025, 06:09 PM
বনানীর প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ছাত্রী ফারিয়া হক টিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
টিনাকে তিন দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বনানী থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর মোক্তার হোসেন কারাগারে পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৮ মে রাতে ভাটারার নর্দা এলাকা থেকে টিনাকে গ্রেপ্তারের পরদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।
পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করতে গত ২৩ এপ্রিল আদালতের নির্দেশের ১৫ দিন পর টিনাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
গত ১৯ এপ্রিল প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে তার মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর আটজনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন।
মামলার আজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- মেহরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। তাদের ছাড়াও নাম না দিয়ে আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে মেহরাজ, হৃদয় মিয়াজী ও মাহাথির গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। এজাহারের বাইরে মো. আল কামাল শেখ, আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানি নামে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
আসামিদের মধ্যে হৃদয় মিয়াজী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা ইউনিটের যুগ্ম সদস্য সচিব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষারও এ হত্যা মামলার আসামি।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পারভেজকে নিজেদের কর্মী দাবি করে এ হত্যাকাণ্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী শাখার কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ করে ছাত্রদল।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯ এপ্রিল বিকালে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে একটি পুরি-সিঙ্গারার দোকানে খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে হাসাহাসি করছিলেন পারভেজ। সেসময় তাদের পেছনে অন্য প্রতিষ্ঠানের দুজন ছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন।
একপর্যায়ে মামলার এক নম্বর আসামি মেহরাজসহ তিনজন এসে পারভেজের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চান। বিষয়টি নিয়ে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক এসে দুই পক্ষকে প্রক্টরের রুমে ডেকে নিয়ে মীমাংসা করে দিলে মেহরাজসহ তার সঙ্গীরা বিশ্ববিদ্যালয় ভবন থেকে বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরে আসামিরা লাঠিসোঁটা, ছুরি-চাকু ও চাপাতি হাতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ধাওয়া করে পারভেজ ও তার বন্ধু তারিকুল ইসলামকে মারধর এবং পারভেজের বুকে ছুরিকাঘাত করে।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, “মেহরাজ ইসলাম তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার বুকের বাম পাশে সজোরে আঘাত করে।”
প্রাইমএশিয়ার পারভেজ হত্যা: স্কলার্সের ছাত্রী টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে