Published : 02 Jul 2025, 06:11 PM
হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত সাত জাপানি কর্মকর্তার স্মরণে বার্ষিক স্মরণসভার আয়োজন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বুধবার রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেল এক্সিবিশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে (এমইআইসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জাইকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
হোলি আর্টিজানের হামলায় নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর সরকারিভাবে যে কর্মসূচিগুলো আগে নেওয়া হত, এ বছর সেরকম কিছু দেখা যায়নি।
জাইকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর পর এটি নগরবাসীর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে এবং এ সাতজন জাপানি নাগরিক পরামর্শদাতা হিসেবে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের অবদান বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় ও জাইকার ইতিহাসে ‘অবিস্মরণীয়’ হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে জাইকার এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাতসুরা মিয়াজাকি বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য যারা লক্ষ্য ও নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করেছেন, তাদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে, মর্মান্তিক এ ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। আপনারা ওপারে শান্তিতে থাকুন।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহতদের অবদান ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে এবং বাংলাদেশে জাইকার কার্যক্রমে নিয়োজিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন কাতসুরা মিয়াজাকি।
বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাইকা ভবিষ্যতেও বৈশ্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
জাপান সরকার ও বাংলাদেশ সরকার এবং আলমেক করপোরেশন, ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল ও কাতাহিরা অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অংশীদারত্বে এ স্মরণসভা হয়।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও সহকারী মন্ত্রী ইশিজুকি হিদেও, আলমেক করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুজিমা তেতসুজি, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুরে আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহসানুল হক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ হাসান আরিফ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশান-২ এ হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় পাঁচ উগ্রবাদী তরুণ। গুলি চালিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে তারা হত্যা করে।
নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানের, একজন ভারতীয়, দুজন বাংলাদেশি, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক ছিলেন। এর বাইরে হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
ওই সাতজন জাপানি নাগরিক জাইকার অর্থায়নে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে ঢাকায় এসেছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, দুজন ছিলেন নারী।
গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের যে বাড়িটিতে বেকারিটি ছিল, সেই ৫ নম্বর বাড়িতে প্রতি বছরের ১ জুলাই ইতালি, জাপান ও মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা জানানোর রেওয়াজ চালু হয়েছিল। তবে এবার এ ধরনের কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি।