Published : 10 Feb 2025, 09:59 PM
ঢাকার আদবর থেকে নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধারের পর যেভাবে তাকে সংবাদমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে শিশু সুরক্ষা নীতি লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে করছে ইউনিসেফ।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউনিসেফ শিশুটিকে উদ্ধারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে; সাথে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করে যেভাবে পুরো পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ও উপস্থাপন করা হয়েছে সে বিষয়ে।
“বিশেষ করে যেখানে শিশু সুরক্ষা নীতি লঙ্ঘন হয়েছে এবং মিডিয়ায় রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতার অভাব দেখা দিয়েছে।”
১১ বছর বয়সী মেয়েটির সন্ধান চেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা। পরের দিন গত মঙ্গলবার মেয়েটির সন্ধান মেলে নওগাঁয়।
‘শিশুটিকে উদ্ধারের সময় যা যা ঘটেছে তা গভীর উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “পুলিশ দ্বারা সুরক্ষিত ও বেষ্টিত থাকার পরিবর্তে তাকে ক্যামেরায় সর্বসম্মুখে নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যা তার মানসিক অবস্থাকে আরও নাজুক করে তোলে।
“শিশু আইন ২০১৩-এ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা আছে যে এই ধরনের ঘটনা কীভাবে সামাল দেওয়া উচিত। ধারা ৫৪(১) এ কন্যাশিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু প্রোটোকলের উল্লেখ রয়েছে, যেখানে বলা আছে, এমন পরিস্থিতিতে কন্যাশিশুদেরকে একজন নারী পুলিশ অফিসার দ্বারা সংবেদনশীলভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে হবে এবং এই সময় অবশ্যই শিশুটির আস্থাভাজন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সহায়তার জন্য তার সাথে থাকবেন।”
ইউনিসেফ বলছে, “ধারা ৯১-এ আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুদের জন্য শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তাদের (চাইল্ড অ্যাফেয়ার্স পুলিশ অফিসার-CAPOs) ভূমিকার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে শিশুটির সাক্ষাত্কার টেপ বা রেকর্ড করা হয় এবং এর চেয়েও ভয়ঙ্কর বিষয় হল, সাক্ষাৎকারটির ফুটেজ তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয় শিশুটির পরিচয় গোপন না করেই- যা প্রমাণ দেয় যে আইন মানা হয়নি।”
গণমাধ্যমে বারবার সিটিটিভির ফুটেজ শেয়ার করার বিষয়ে বলা হয়, “মিডিয়া এমন বেশকিছু ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ বারবার শেয়ার করেছে; এর চেয়েও ভয়ের বিষয় হচ্ছে মিডিয়া তাদের বর্ণনায় প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষকে শিশুটির 'বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক' হিসাবে আখ্যায়িত করেছে- এভাবে একটি বিপজ্জনক ও ভুল ব্যাখ্যাকে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।”