Published : 07 May 2025, 11:54 PM
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৫৪৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ কম।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৫৭৫ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৩৩৮৭ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৩০৯৫ কোটি ডলার। সেই হিসেবে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৪৯৩০ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা।
আগের অর্থবছর একই সময়ে আমদানি ব্যয় ছিল ৪৬৭০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।
চলতি হিসাব
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে লেনদেন ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে।
মার্চ পর্যন্ত সময়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ৬৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৪৪০ কোটি ডলার।
কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। তবে ঘাটতি থাকলে তা মেটাতে ঋণ নিতে হয়।
আর্থিক হিসাব
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে। মার্চ পর্যন্ত আর্থিক হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৩১ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৯০ কোটি ১০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।
আর্থিক হিসাব করা হয় বিদেশি ঋণ ও সহায়তা, বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এবং পোর্টফলিও ইনভেস্টমেন্টের পরিসংখ্যানগুলোর যোগ বিয়োগ করে।
প্রথম নয় মাসে ট্রেড ক্রেডিটের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল ২১৬ কোটি ডলার ছিল।
এই নয় মাসে এররস অ্যান্ড অমিশনস সূচকে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯৮ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ১৫৫ কোটি ডলার ছিল।
অর্থনীতিবিদরা যা বলছেন
বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মার্চ মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে। এ কারণে চলতি হিসাবের ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এছাড়া আর্থিক হিসাবে খুব একটা বড় পরিবর্তন ঘটেনি।”
তিনি বলেন, “ট্রেড ক্রেডিটে ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে মার্চে ৫০০ মিলিয়নের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। জাহাজে যে পণ্য ওঠানো হয় আর সেটার যে বিল পাওয়া যায় সেটাই ট্রেড ক্রেডিটের সূচক। যেটা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কম ছিল। মার্চে বেড়েছে।”
জাহিদ হোসেন মনে করেন, রপ্তানিকারকরা যা রপ্তানি করতেন, তার প্রত্যাবাসিত আয় ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঠিকভাবে আনছিলেন।
“এররস অ্যান্ড অমিশনসে ঘাটতি প্রায় ২০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এই পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, তবে কোন খাতে হয়েছে তা বলতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।”