Published : 29 Mar 2023, 08:44 PM
মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচা বাজারে অভিযান চালিয়ে দুটি মাছের নমুনা পরীক্ষা করে ফরমালিনের উপস্থিতি না পাওয়ার কথা জানিয়েছে মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন-বিএসটিআই।
অভিযান শেষে সংস্থাটি এও জানিয়েছে, ওই বাজারে ‘সব কিছু ঠিকঠাক’ আছে। তালিকার চেয়ে বেশি দাম নেওয়া হয়নি কোথাও। কেবল এক দোকানির ডিজিটাল ওজন মাপার মেশিনের ত্রুটি থাকায় তাকে এক হাজার টাকার ‘প্রতীকী জরিমানা’ করা হয়েছে।
বুধবার তেজগাঁওয়ের বিএসটিআই ভবন থেকে মহাপরিচালক আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে অভিযানে বের হয় একটি দল। অভিযানের জন্য তারা বেছে নেন মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচা বাজার।
বিএসটিআইয়ের দলটি প্রথমেই মাংস ও মাছের বাজারে যায়। সেখান থেকে দুটি নমুনা নিয়ে তাতে ফরমালিনের উপস্থিতি আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। বেশ ঘটা করে এই পরীক্ষা শেষে জানানো হয়, কিছুই পাওয়া যায়নি।
এরপর দলটি যায় ফলের দোকানে। সেখান থেকে আপেল ও মাল্টা পরীক্ষা করে তাতেও ক্ষতিকর কোনো উপাদান না পাওয়ার কথা জানানো হয়।
২০০৬ সালে ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরুর পর মাছে ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়ার কথা বলা হয় ব্যাপক হারে। কয়েক বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে শোরগোল চলে।
এমনকি ফলেও ফরমালিনের উপস্থিতি নিয়ে নানা কথাবার্তা বলা হতে থাকে। র্যাব এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অভিযানে বিপুল পরিমাণ ফল নষ্ট করতেও দেখা যায় সে সময়।
তবে কয়েক বছর আগে হাই কোর্টের একটি শুনানিতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফলে ফরমালিন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এরপর নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর ‘ফলে ফরমালিন’ নিয়ে অভিযান বন্ধ করতে বলে।
বাজারে মাছের দোকানগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন বিএসটিআইয়ের কারিগরী কর্মকর্তারা। নমুনা নেওয়া হয় ফলের দোকান থেকেও। এসময় ডিজিটাল ওয়েট মেশিনের মেয়াদ না থাকায় জরিমানা করে বিএসটিআই।
মাছ ও ফল পরীক্ষার পর বিএসটিআইয়ের এক রাসায়নিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, “আমরা আজকে মাছের দুটি নমুনা নিয়েছি। একটি মাছ হল রূপচাঁদা, আরেকটি হল পাঙ্গাস মাছ। আর ফলের দুটি নমুনা নিয়েছি– একটি আপেল, আরেকটি মালটা। এই চারটি নমুনার ফরমালিন পরীক্ষায় কোনো ফরমালিন পাওয়া যায়নি।”
পরে বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক বলেন, “মানুষের মাঝে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে যে ফলে ফরমালিন থাকে। ফরমালিন উদ্বায়ী, এখন পরীক্ষা করে আমরা কোথাও পাইনি। কসমেটিক্স বা অন্য পণ্যে ভেজাল যে হচ্ছে না তা বলছি না।”
এ অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, “মানসম্পন্ন পণ্য যেন আমরা দিতে পারি, তার ধারাবাহিকতায় রমজান উপলক্ষে আমরা একটা নজরদারির জন্য এসেছি। মূল্য দেখাটা আমাদের কাজ না। তাও দেখেছি। ক্রেতাদের জিজ্ঞেস করেছি, তার বলেছেন মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি নেওয়া হচ্ছে না।
“অধিকাংশ ওয়েট মেশিন আমরা ঠিক পেয়েছি, এক দুইটা মেশিনে ত্রুটি পেয়েছি, ক্যালিব্রেশনে সমস্যা পেয়েছি, একজনকে জরিমানাও করা হয়েছে।”
ভেজাল প্রতিরোধে সারাদেশে মাসে প্রায় ২৫০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, “বাজারে বাজারে বিএসটিআইয়ের অফিস রাখা সম্ভব না। মাঝে মাঝেই আমরা আড়তগুলোতে যাচ্ছি। যেগুলো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সেগুলো নিয়ে আমাদের নিয়মিত নজরদারি অব্যাহত আছে।”