Published : 23 Dec 2024, 12:20 AM
প্রথমবারের মত ‘সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট’ প্রকাশ করল দেশের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
'সমৃদ্ধ আগামীর লক্ষ্যে, জীবনের পরিচর্যা' প্রতিপাদ্যে এ প্রতিবেদনে আটটি মৌলিক স্তম্ভের ওপর গড়ে তোলা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের টেকসই হওয়ার কৌশল তুলে ধরা হয়েছে।
আট মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে রয়েছে সাসটেইনেবল পণ্য, সাসটেইনেবল প্যাকেজিং, কৃষি, পানি ও শক্তি।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বিগত সরকার ‘ডিকটেটরশিপ’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই রাজনীতি ‘নষ্ট করেছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক ‘সাসটেইনেবলিটি’ চায়।
"আমরা পলিটিক্যাল সাসটেইনেবলিটি চাই। অধ্যাপক ইউনূসের মূল কাজটা হচ্ছে এমন রিফর্ম করা, যে রিফর্মের দ্বারা একটা সাসটেইনেবল পলিটিক্যাল সেটেলমেন্ট হয়। এবং আরেকটা কাজও করছেন, বিজনেসকে সাসটেইনেবল জায়গায় নিয়ে আসা।"
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, "আমরা খুবই ভঙ্গুর একটা দেশ। খুবই দুর্বল একটা ইকোসিস্টেম। ২০০-৩০০ রিভারের সিস্টেম, সেখানে অন্যান্য দেশের কনজাম্পশন প্যাটার্নের সাথে আমাদের কনজাম্পশন প্যাটার্ন যায় কিনা… অনেক অনেক প্রশ্ন।"
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে আলাপ জারি রাখছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "আমি ১৫-১৬টা কেবিনেট মিটিংয়ে ছিলাম। সাসটেইনেবলিটি সব আলাপেই ছিল। রিজওয়ানা (পরিবেশ উপদেষ্টা) আপা খুব বোল্ডলি এগোতে চান। কিন্তু সবার একটাই কথা, এমন কোনো কাজ করব না যাতে আমার জবগুলো চলে যায়। আমার জবটা তো ধরে রাখতে হবে।
"আমি যাইই করি না কেন, মানুষগুলো যাতে ইমেডিয়েটলি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেটা তো আমাদের দেখতে হবে।"
এই জায়গায় প্রাণ ‘ব্রিলিয়ান্ট কাজ' করেছে মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, "টেন পারসেন্ট ওয়াটার কনজামপশন, ইউজ কমানো, এটা খুবই ব্রিলিয়ান্ট। গ্রামে আমি দেখেছি, ফ্রেশ ওয়াটারের ক্রাইসিস অনেক জায়গায় শুরু হয়ে গেছে।
এ দেশের নদ-নদী ও পুকুরসহ সকল প্রাকৃতিক বৈচিত্রের প্রাকৃতিক রূপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধরে রাখতে চায় বলে প্রেস সচিবের ভাষ্য।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরীও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে 'টেকসই কৃষি: চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়' এবং 'সাসটেইনেবিলিটি অর্জনে কর্পোরেট নেতৃত্বের ভূমিকা' শীর্ষক দুটি প্যানেল আলোচনা হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সাসটেইনেবিলিটির গুরুত্ব এবং এটি নিশ্চিত করতে অংশীজনদের ভূমিকা তুলে ধরেন।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী বলেন, "প্রথম প্রতিবেদনটি সাসটেইনেবিলিটির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
"এই প্রতিবেদনটি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের টেকসই যাত্রায় একটি যুগান্তকারী মুহূর্তকে নির্দেশ করে। পুরো প্রতিবেদন জুড়ে 'সমৃদ্ধ আগামীর লক্ষ্যে, জীবনের পরিচর্যা' শীর্ষক প্রতিপাদ্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যেখানে ব্যাপকভাবে জীবিকা বৃদ্ধির জন্য এবং একটি পরিচ্ছন্ন ও সবুজ বিশ্বে অবদান রাখার জন্য আমরা যে পথগুলি নির্ধারণ করেছি সেগুলো চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।”
সাসটেইনেবিলিটি সংক্রান্ত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের লক্ষ্যসমূহের মধ্যে রয়েছে-জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১০০ শতাংশ বিনিয়োগ করা, ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করা, কৃষি-পণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের ৯০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা, সকল কারখানায় পানির ব্যবহার ৩০ শতাংশ হ্রাস করা, জ্বালানির ব্যবহার ২০ শতাংশ হ্রাস এবং কারখানায় ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ২৫ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করা।