Published : 17 May 2025, 10:03 PM
কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটের ইজারার দরপত্র জমা দেওয়া নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (সিসিসি) দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
পতেঙ্গা-ইপিজেড এলাকার বিএনপিপন্থি দুই ইজারাদারের কর্মীরা শনিবার বিকালে নগরীর টাইগার পাসে অস্থায়ী নগর ভবনের সামনে এ ঘটনায় জড়ায় বলে প্রতক্ষ্যদর্শীদের ভাষ্য।
সিটি করপোরেশনের ৯টি অস্থায়ী পশুর হাটের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল শনিবার। বৃহস্পতিবার এসব হাটের দরপত্র ফরম বিক্রি শেষ হয়।
শনিবার দুপুর থেকেই টেন্ডার জমা দেওয়া নিয়ে নগর ভবনের সামনে উত্তেজনা ছিল।
এরমধ্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগর ভবন থেকে বের হওয়ার সময় কাউকে দরপত্র জমা দিতে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ দেন।
নগর ভবনে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মেয়র চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর নগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আউটার রিং রোড সিডিএ বালুর মাঠ নামের অস্থায়ী পশুর হাটটির দরপত্র জমা দেওয়া নিয়ে পতেঙ্গা-ইপিজেড এলাকার বিএনপিপন্থি দুই ইজারাদারের লোকজনের মধ্যে মারামারির এ ঘটনা ঘটে।
তারা বলেন, দুই পক্ষ হাতাহাতি করতে করতে নগর ভবনের সামনের সড়কে যায়। সেখানেও তাদের মধ্যে মারামারি চলে। এক পর্যায়ে কাছের আমবাগান এলাকা থেকে কিছু লোকজন এসে জড়ায়।
খুলশী থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টেন্ডার জমা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। এসময় একজনকে কিল-ঘুষি মেরেছে। স্থানীয় কিছু লোকজন এতে জড়িয়ে পড়েছিল। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই তারা পালিয়ে যায়।
”জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।”
চলতি বছর কোরবানির ঈদে পশুর হাট বসাতে ৯টি অস্থায়ী হাটের ইজারা দিচ্ছে সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি প্রতিবারের মত তিনটি স্থায়ী হাটেরও ইজারা দেওয়া হচ্ছে।
নগর ভবনের দ্বিতীয় তলায় মেয়র কার্যালয়ের পাশে দরপত্র জমা দেওয়ার বক্সটি রাখা হয়। বেলা ১২টা থেকেই দরপত্র জমা দেয়া নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়।
আধা ঘণ্টা পর মেয়র বের হয়ে পরিস্থিতি দেখে জড়ো হওয়াদের উদ্দেশে বলেন,
“সবাইকে বক্সে টেন্ডার ফেলতে দিতে হবে। যদি কেউ বাধা দেয় আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমি বলতেছি, টেন্ডার সবাই ফেল। সবার অধিকার আছে টেন্ডার ফেলার। নিয়মতান্ত্রিকভাবে বক্সে সবাই টেন্ডার ফেলবে।”
এরপর মেয়র কার্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর দরপত্র জমা দিতে আসা কয়েকজন দরপত্র জমা দেন। বেলা আড়াইটার দিকে আবার দুই পক্ষের মধ্যে বাক বিতণ্ডা শুরু হয়।
করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এম সরওয়ার কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোন হাটের দরপত্র জমা নিয়ে সমস্যা হয়েছে সেটা আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। একজন আরেকজনকে গালাগালি করেছিল। পরে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা আমাদের কম্পাউন্ডের বাইরে চলে যায়।
“বাইরে একজনকে মারধর করছিল বলে শুনেছি। পরে লোকজন এসে রক্ষা করেছে। আমাদের ভবনের ভিতর সিসি ক্যামরা থাকলেও বাইরে নেই। ভবনের ভিতরের সিসি ক্যামরা ফুটেজ দেখে মারধরকারী এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেছে। কিন্তু তার নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।”
সংশ্লিষ্টরা বলেন, শনিবার যেসব অস্থায়ী হাটের দরপত্র জমা পড়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে বড় হাটটি হল কর্ণফুলী পশুর হাট। এটির সরকার নির্ধারিত ২ কোটি ৭২ লাখ টাকার নূন্যতম নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও কম দর জমা পড়েছে।
শুধু দুটি অস্থায়ী হাটের সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দর পড়েছে জমা দেওয়া দরপত্রগুলোতে। সেক্ষেত্রে বাকি হাটগুলোর জন্য দরপত্র বাছাই শেষে আবার নতুন করে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয়া হতে পারে।