Published : 24 Sep 2024, 07:31 PM
উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আবারও নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত রেপোর সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এতে রেপোর হার দাঁড়াবে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
বুধবার থেকেই রেপোর নতুন সুদহার কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত চিঠি ব্যাংকগুলোকে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও রেপো হার বাড়ানোর তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর ২৫ অগাস্ট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপো হার ৯ শতাংশ করা হয়েছিল।
এ নিয়ে সরকারের পালাবদলে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মত নীতি সুদহার বাড়ানো হল।
আর চলতি বছরে বাড়ানো হল চারবার। বছরের শুরুর দিকে ১৭ জানুয়ারি বাড়ানো হয় ২৫ বেসিস পয়েন্ট। এরপর ৮ মে বাড়ানো হয় ৫০ বেসিস পয়েন্ট।
এবার রেপো বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৫ অগাস্ট মুদ্রানীতি কমিটির সভায় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপো নীতি সুদহার আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে।
এর ফলে তারল্যে সংকটে পড়া কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেওয়ার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহে আরও চাপ বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে টাকার সরবরাহ আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে মনে করছেন গভর্নর।
উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বেশ কিছুদিন থেকে ধুকছে সীমিত আয়ের মানুষ। আগে থেকে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির হার আন্দোলন, সংঘাত, কারফিউ আর অচলাবস্থার মধ্যে জুলাইয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায়। তবে মূল্যস্ফীতির পারদ অগাস্টে সামান্য নেমে এলেও এখনও তা দুই অঙ্কের ঘরেই রয়েছে।
পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অগাস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ে যা ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সোমবার সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতি কমার বিষয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, “মূল্যস্ফীতি মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে একটি ভালো জায়গায় চলে আসবে। কতখানি ভালো জায়গায় আসবে সেটা হয়ত বলা যাবে না। তবে আমরা পলিসি টাইট করব, যাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আমাদের এখন বিনিময় হার স্থিতিশীল আছে। এছাড়া রেমিটেন্সও বাড়ছে। আশা করি আগামীতেও বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকবে। যদি এটা ধরে রাখা যায় তাহলে মূল্যস্ফীতি অবশ্যেই কমে আসবে।”
রেপো সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি এদিন এসএলএফ ও এসডিএফ এর ঊর্ধ্বসীমাও বাড়ানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনা অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে নীতি সুদহারের করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ শতাংশ করা হয়েছে।
পাশাপাশি নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ