Published : 26 Mar 2025, 09:18 AM
নিজের কাজের সাফল্যে বেশি পরিচিত হওয়ার চাইতে বাবার খ্যাতির ছটায় নাম ছড়ানো অভিনেতা অভিষেক বচ্চন এক সময়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কারণ লাগাতার ফ্লপের যন্ত্রণা আর বইতে পারছিলেন না এই অভিনেতা।
সেই ‘ভঙ্গুর’ মানসিক অবস্থায় বাবাকে পাশে পেয়েছিলেন অভিষেক।
তবে কেবল বাবা হিসেবে নয়, একজন সহ অভিনেতা হিসেবে অভিষেককে সামনে এগিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছিলেন অমিতাভ।
মুম্বাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে অভিষেক তার মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বি হ্যাপি’ নিয়ে কথা বলার সময় ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের সংগ্রামে বাবাকে কোন ভূমিকায় পাশে পেয়েছিলেন সেই গল্প শুনিয়েছেন।
তারকার সন্তান হওয়া যে সহজ নয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন অভিষেক। ২০০০ সালে প্রথম ছবি ‘রিফিউজি’ মুক্তির আগে থেকেই শুনতে হচ্ছে, তিনি ‘যোগ্য পিতার অযোগ্য সন্তান’, ‘বাবার নাম ভাঙিয়ে খান’, ‘চাইলেই সেরা হওয়া যায় না’ ইত্যাদি ইত্যাদি। সমালোচনার তীর্যক ভাষা বহুবার বহুভাবে ব্যবহৃত হয়েছে অভিষেক সম্পর্কে।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালক নয়নদীপ রক্ষিতকে অভিষেক বলেছেন এমন পরিস্থিতিও হয়েছে যে তিনি অভিনয় একেবারে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছেন।
“ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে। যতই চেষ্টাই সে সময় করি না কেন, যা অর্জন করতে চেয়েছিলাম, তা পারিনি। যে ধরনের মানদণ্ডে নিজেকে নিতে চেয়েছিলাম, তাতে ব্যর্থ হয়েছি।”
এমন পরিস্থিতিতে অভিষেক অভিনয় জগত ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিষেক এবং সে কথা বাবাকে জানিয়েছেন তিনি।
অভিষেক বলেন, “মনে পড়ে, একবার রাতে বাবার কাছে গিয়ে বলেছিলাম আমি বোধহয় নিজের পেশা নির্বাচনে ভুল করেছি। আর সেই কারণেই হয়ত যে কাজে হাত দিচ্ছি, সেটাই বিফলে যাচ্ছে। বারে বারে ব্যর্থতার সম্মুখীন হচ্ছি। আমার মনে হয় অভিনয় থেকে এবার সরে দাঁড়ানো দরকার।”
ছেলের ওই সিদ্ধান্ত বদলাতে বড় ভূমিকা নেন অমিতাভ।
অভিষেকের মনের জোর বাড়াতে তিনি অভিষেকের সঙ্গে বাবা হিসাবে নয়, কথা বলেন একজন সহ অভিনেতা হিসাবে।
অভিষেক বলেন, “বাবা বললেন, একজন সহ অভিনেতা হিসাবে আমি বলতে পারি, তোমার এখনও অনেক পথ চলা বাকি। প্রত্যেকটা কাজ তোমাকে নতুন করে শুরু করতে হবে। তবেই উন্নতি করতে পারবে। আমি কখনোই চাই না তুমি মাঝপথে হাল ছেড়ে পালিয়ে যাও। ত্যাগী হতে বলছি না, তুমি লড়াই চালিয়ে যাও। সাফল্য তোমার কাছে ধরা দেবে। বাবার এই কথাগুলোই আমার কাছে বেদবাক্য। ”
তখন থেকেই ব্যর্থতাকে সাফল্যের অংশ হিসেবে ধরে নিয়েছেন মন্তব্য করে অভিষেক বলেন, “বাবার সেই কথাগুলো পাথেয় করে আজও আমি এগিয়ে চলেছি।”
যে কোনো কাজে গতি বজায় রাখতে বা সফলতা আনতে পারিবারিক সমর্থনের তাৎপর্য তুলে ধরেন অভিষেক।
“বাবা-মায়ের কাছ থেকেই সমর্থনের ব্যাপারটা প্রথমে আসে। আসলে বাবা মায়েরা তো সন্তানের জন্য ঢাল হিসেবে থাকেন। হ্যাঁ এই মনোভাব কখনো কখনো পরিস্থিতি নেতিবাচকও করে তুলতে পারে। তবে তারা সবসময় সন্তানকেই সমর্থন করে এই বিশ্বাস রাখতে হবে।”
নিজের মেয়ে আরাধিয়া বচ্চনের উদাহরণ টেনে অভিষেক বলেন, "আজ আমার মেয়ে যদি আমার কাছে আসে, তবে আমি নিশ্চিত না যে সে কী করতে চায়, কিন্তু যদি আমি তার বিশ্বাসের মধ্যে দৃঢ়তা দেখতে পাই, তাহলে জোর দিয়ে বলব যে সে যা করতে চায়, তা সে পারবে।”
রেমো ডি’সুজা পরিচালিত অভিষেক ও নোরা ফাতেহির ‘বি হ্যাপি’ মুক্তি পেয়েছে গত ১৪ মার্চ ওটিটিতে।