Published : 14 May 2025, 11:26 AM
দেড় বছর আগে কিংবদন্তি নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায় জানিয়েছিলেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ সিনেমাটির সংস্কার করা হচ্ছে। অবশেষে সেই কাজ শেষ হয়েছে। সত্যজিতের এই সিনেমা দর্শকদের জন্য নতুন করে পর্দায় আসছে।
‘অরণ্যের দিনরাত্রির’ ফোর-কে সংস্করণের প্রিমিয়ার হচ্ছে ফ্রান্সের সাগরপাড়ে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে।
নতুন সংস্করণটি তৈরি করেছে দ্য ফিল্ম ফাউন্ডেশনের ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট। প্রদর্শনী উপলক্ষে কানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন সিনেমার অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গাড়েওয়াল, প্রযোজক পূর্ণিমা দত্তসহ সিনেমা সংশ্লিষ্ট আরও অনেকে।
পরিচালক সন্দীপ রায় আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন কেবল ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ নয়, সত্যজিতের আরো কয়েকটি সিনেমার সংস্কার করা হবে। এরপর হাত দেওয়া হবে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ এবং ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমাতেও।
সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় একই নামের সিনেমা তৈরি করেন ১৯৭০ সালে।
ওই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, শমিত ভঞ্জ, রবি ঘোষ, শর্মিলা ঠাকুর, কাবেরী বসু, মিমি গঙ্গোপাধ্যায়সহ আরো কয়েকজন।
কেন এই সিনেমা সন্দীপের এত প্রিয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনেক তারকার সমাবেশ এই ছবিতে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গারেওয়াল, রবি ঘোষ, শমিত ভঞ্জসহ সেই সময়ের প্রথম সারির তারকা অভিনেতারা কাজ করেছেন। সিনেমা জুড়ে বাবার সূক্ষ্ম মনস্তত্বের পরিচয়, যা কখনও উচ্চকিতভাবে সিনেমার মূল সুরকে ছাপিয়ে যায়নি।"
সন্দীপ তাই ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ সিনেমাটিকে তার বাবার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বলে দাবি করেছেন।
তবে সিনেমার অধিকাংশ অভিনয় শিল্পী প্রয়াত হয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণদের মধ্যে বর্তমার আছেন কেবল শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গারেওয়াল।
সন্দীপ বলেন, “শর্মিলা ঠাকুর নিজেই ভীষণ উৎসাহিত। তিনি উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সিমি পৌঁছোতে পারবেন না। দেশের কোথাও সিনেমাটি দেখানো হলে তিনি উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন।“
সন্দীপ জানিয়েছেন, কানের পর কলকাতায় নতুন সংস্করণের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ দেখানো হবে কলকাতায়।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘অরণের দিনরাত্রি’ ১৯৬৮ সালে প্রকাশ হয় । সেই উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় দুই বছর পরে নির্মাণ করেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ সিনেমা।
মূল কাহিনী ঠিক রেখে কাঠামো, চরিত্র, লোকেশনে কিছুটা পরিবর্তন আনেন নির্মাতা। যা গল্পকে আরও বেশি জীবনঘনিষ্ঠ করে।
গল্পে চার বন্ধু, অসীম, সঞ্জয়, হরি ও শেখর। তারা কলকাতায় বসবাস করেন। ছুটি কাটাতে পালামৌতে আসেন। সেখানে একটি ট্যুরিস্ট বাংলোতে থাকেন।
উদ্দেশ্যহীনভাবে জঙ্গলে ঘুরতে বের হলেও নানান ঘটনায় আন্তসম্পর্কের গল্প হয়ে এগিয়ে চলে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র চরিত্রগুলো।