Published : 21 Oct 2024, 03:59 PM
জনকল্যাণ সংস্থা আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে গায়ক মনি কিশোরের মরদেহ ‘দাফন করা হবে’ বলে যে খবর ছড়িয়েছে তা ‘সঠিক’ নয় বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শিল্পীর ভগ্নিপতি নাট্যশিক্ষক বিপ্লব বালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, গায়ক মনি কিশোরের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরেই থাকছে। প্রয়াত শিল্পীর মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, “দাফন নাকি সৎকার করা হবে, এ ব্যাপারটি নিয়ে যেহেতু মনি কিশোর বলে গেছেন, সেভাবেই তার মেয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তারা যেটা ভালো মনে করবে, সেটা যেন করেন। ফলে মেয়ে আসার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।”
আঞ্জুমান মফিদুল নিয়ে বিল্পব বালা বলেন, “মনি কিশোরের লাশ তো বেওয়ারিশ নয়। সাধারণত বেওয়ারিশ লাশের দাফন বা সৎকার করে থাকে আঞ্জুমানে মফিদুল। তার পরিবারের সদস্যরা আছেন।”
রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে শনিবার রাত ১০টার দিকে মনি কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। বিয়ের সময় তিনি সনাতন থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন বলে জানা যায়। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর অনেক বছর ধরে মনি কিশোর বাসায় একাই থাকতেন। তার একমাত্র মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী।
কয়েকদিন ধরে দেখা না পেয়ে মনি কিশোরের বাড়ির দরজায় গিয়ে তাকে ডাকাডাকি করেন বাড়িওয়ালা। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় বাড়িওয়ালা তারপর পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ওই বাড়ির দরজা ভেঙে গায়কের নিথর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা আর চার বা পাঁচ দিন আগে মনি কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
রামপুরা থানার ওসি আতাউর রহমান আকন্দের ভাষ্য, শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না যাওয়ায় অসুস্থ্যতাজনিত কারণে মনি কিশোর মারা যেতে পারেন বলে ধারণা করছেন তারা।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে জানিয়ে বিপ্লব বালা বলেন, “দেহে কোনো জখম বা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বাসায় যেহেতু ওইদিন একা ছিল। অসুস্থ হওয়ার পর ওই সময়টাতে তার পাশে কেউ ছিল না। ময়নাতদন্তে আমরা জেনেছি, তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। অসুস্থতাজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে।”
মনি কিশোর নামে সংগীতাঙ্গনে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মনি মণ্ডল। কিশোর কুমারের ভক্ত ছিলেন বলে নামের সঙ্গে ‘কিশোর‘জুড়ে নিয়েছিলেন। এ তথ্য তিনি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন।
প্রায় এক যুগ আগে এই শিল্পীর সবশেষ গানের অ্যালবাম বেরিয়েছিল। তবে রেডিও, টিভিতে মাঝেমাঝে গান গেয়েছেন। স্টেজ শো'তেও অনিয়মিতভাবে গেয়েছেন।
গানের জগতে আসার আগে থেকেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এই গায়ক। পরে গানে অনিয়মিত হয়ে ব্যস্ত ছিলেন কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে।
মনি কিশোর কণ্ঠ দিয়েছেন পাঁচ শতাধিক গানে। রেডিও, টিভির তালিকাভুক্ত এই শিল্পীর জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাস ‘, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’সহ আরো বহু গান।
তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা, তারই লেখা। ২০টির মত গান লিখেছেন ও সুর করেছেন মনি কিশোর।
নিজ বাসা থেকে গায়ক মনি কিশোরের লাশ উদ্ধার