Published : 15 Jun 2024, 04:06 PM
সমসাময়িক সহশিল্পী প্রয়াত স্মিতা পাতিলের সঙ্গে 'রেষারেষির' সম্পর্কের জন্য নিজেকে 'দায়ী করে' অনুতাপে পুড়ছেন ভারতীয় সিনেমার অভিনেত্রী শাবানা আজমী।
আনন্দবাজার লিখেছে স্মিতা পাতিলের মৃত্যুর ৩৮ বছর পর, এক পডকাস্টে এসে শাবানা বলেন, " একটা সময়ে আমি স্মিতা পাতিলকে নিয়ে অনেক অপ্রীতিকর কথাবার্তা বলেছি। এজন্য আমি অত্যন্ত লজ্জিত। আমার সেগুলো বলা উচিত হয়নি।”
কিন্তু যতটা তিনি বলেছেন, ওই কথাগুলোকে তার চেয়েও বেশি মশলাদার বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ শাবানার।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে শাবানা এবং স্মিতা দুজনে অভিনয়ে আসনে। ‘নমক হালাল’, ‘মির্চ মাশালা’, ‘ভূমিকা’, ‘নিশান্ত’, ‘চক্র’ আর অনেক সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়ে পৃথিবী থেকে চিরতরে স্মিতা পাতিল বিদায় নেন ১৯৮৬ সালে।
আর প্রায় পাঁচ দশক ধরে নানা ধরনের সিনেমায় অভিনয় করে শাবানা আজমী একজন স্বনামধন্য তারকা অভিনেত্রী।
দুই অভিনেত্রীর মধ্যে রেষারেষির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার।
পডকাস্টে শাবানাকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে সখ্য থাকলেও তাদের দুজনের মধ্যে ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা, যা রূপ নেয় মনোমালিন্যে।
শাবানা বলেন, “খুব আফসোস হয় যে, আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্পর্ক ছিল। অথচ আমাদের দুজনের দুই মা-বাবা সমাজকর্মী ছিলেন। আমরা দুজনই পরিচালক শ্যাম বেনেগালের হাত ধরে সিনেমায় অভিনয় শুরু করি। আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল ছিল। তাই আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হওয়া উচিত ছিল।"
শাবানার কথায় জানা গেল, ১৯৮২ সালে ‘বাজ়ার’ সিনেমায় মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করছিলেন স্মিতা। আর ওই সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করছিলেন শাবানার মা শৌকত আজ়মী। শুটিংয়ের সময়ে তাদের জন্য একটি হোটেলের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। স্মিতা যখনই শুনেছিলেন শাবানার মা আসছেন, তখন তিনি নিজের কক্ষটি শৌকত আজমীর জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন।
এই ঘটনা বর্ণনা করে শাবানা বলেন, " আপনারা দেখুন কি সুন্দর ঘটনা এটা। স্মিতা কোন পরিবেশে বড় হয়েছে তার প্রতিফলন এটা। স্মিতার মৃত্যুর পরে ওর মা-বাবা আমার সঙ্গে এমন ভাবে মিশেছেন যেন আমিই তাদের মেয়ে”।
কথা বলতে বলতে আপ্লুত হয়ে পড়ে এই অভিনেত্রী।
স্মিতা পাতিল তার এক যুগের ক্যারিয়ারে ৮০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন দুবার। তিনবার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে মাত্র ৩১ বছর বয়সেই মারা যান স্মিতা পাতিল।