Published : 22 Feb 2025, 09:58 PM
সম্পত্তির বিরোধে হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে এ ঘটনার জন্য নিজের ছোট মামি ও স্থানীয় এক বিএনপিকে নেতাকে দোষারোপ করেছেন লামিয়া চৌধুরী।
অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি ও অভিনেতা সোহেল চৌধুরীর কন্যা লামিয়া শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এদিন দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দিয়াপাড়া এলাকায় তার ওপর হামলা হয়।
“ছোটমামা টিপু সুলতানের স্ত্রী লায়লা লুৎফুন্নাহার শারমিন প্রীতি ও মোশারফ হোসেন নামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতা এ হামলার জন্য দায়ী।”
গুলশানের বাসায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন লামিয়া চৌধুরী। সেখানে লামিয়া বলেন, "ছোটবেলায় বাবা মারা গেছেন; মা নেই প্রায় নয় বছর। আমার একটা ভাই; বিদেশে থাকে। আমি দেশে ফিরে প্রতি সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ যাই; সেখানে একটু ভালো মুহুর্ত কাটাতে যাই।
“কিন্তু আজকের ঘটনা পরিকল্পিত। ৪০ থেকে ৫০ জন হামলা করতে আসে।”
"খালামণিকে নিয়ে রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। বাধা দিতে গেলে তারা আমার গায়ে হাত দেয়। ওড়না, জামা টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে।”
তিনি বলেন, “যখন সেখান থেকে কোনোরকম বের হওয়ার চেষ্টা করি, তখন পায়ে আঘাত করে, গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। আমি রেকর্ড করছিলাম বলে ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলেট করে দেয়।"
সম্পত্তি দখলের চেষ্টায় এক মামি এসব করিয়েছেন বলে অভিযোগ লামিয়ার।
"আমার মায়ের সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করছে। আমাদের বংশপরম্পরায় পাওয়া সম্পত্তি, তারা এসে খুঁটি বসিয়ে দিচ্ছে।
“আমার মায়েরা চার ভাই, তিন বোন। দুই মামা মারা গেছেন। নানুর সম্পত্তি চারজনের মধ্যে সমান ভাগ হবে, আমরাও সেটা মেনেই অপেক্ষা করছি। কিন্তু এক ছোট মামি প্রীতি লোকজন দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।"
থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এখনো করিনি। আগে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেব, তারপর মামলা করব।"
এদিকে পাল্টা অভিযোগ করেছেন লামিয়ার মামি প্রীতিও। তার দাবি, জমিসংক্রান্ত বিচারে লোকজন নিয়ে এসে তার ওপর হামলা চালিয়েছেন লামিয়া।
স্থানীয়রা জানান, লামিয়ার মামা টিপু সুলতান অন্তত ৯ বছর আগে মারা গেছেন। তবে তার পরিবারের সঙ্গে লামিয়াদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে; মামলাও আছে। শনিবার সালিশ বসানো হয়।
সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দুপক্ষই হাতাহাতিতে জড়ায়। তখন লামিয়ার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সালিশে লামিয়ার পক্ষের লোকজনও ছিলেন। তার সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা কয়েকজনও ছিলেন।
অন্যদিকে, তার মামা টিপুর স্ত্রী প্রীতি স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতাকে তার পক্ষে ডেকে নিয়ে আসেন। বিএনপির লোকজনও লামিয়ার ওপর হামলায় অংশ নেন।
তারা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের অনুসারী। মোশারফ নিজেও ঘটনাস্থলে ছিলেন।
এ বিষয়ে মোশারফ হোসেন বলেন, “লোকজন শুনেছে, শেখ হাসিনার আত্মীয় শেখ মারুফ নাকি লামিয়ার সঙ্গে আসছে। এ খবর পেয়ে কিছু লোকজন সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু তারা পরে মারুফকে পায়নি। আমার লোকজন কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত না। মহিলারা-মহিলারা এইটা করছে। আর আমিও গিয়েছি ঘটনার অনেক পরে।”
তিনি আরও বলেন, “লামিয়া লোকজন নিয়ে তার মামিকে মারধরও করেছে, এ খবর পাওয়ার পর, আমার বাড়ি যেহেতু পাশেই, তাই গিয়েছিলাম।”
এ বিষয়ে প্রীতি বলেন, “আমার স্বামী মারা গেছে ৯ বছর আগে। তার নামে ৩৮ শতাংশ জমি আছে। আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে সেখানে বসবাস করি। আমার একটা ছেলে অটিস্টিক। আমার স্বামীর জমি দখল করতে চায় লামিয়ারা। এ নিয়ে সালিশ বসলে লামিয়া ঢাকা থেকে লোকজন নিয়ে এসে আমার ওপর হামলা চালায়।”
আহত অবস্থায় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বলেও দাবি প্রীতি।
আরও পড়ুন: