Published : 08 May 2023, 10:35 PM
আবৃত্তি, গান ও আলোচনার মধ্য দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জয়ন্তী উদযাপন করছে ছায়ানট।
সোমবার ঢাকার ধানমণ্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু হয়েছে। ছায়ানট বড়দলের পরিবেশনায় সম্মেলক নৃত্যগীত ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে’ এর মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়।
উৎসব কথন পর্বে বক্তব্য দেন ছায়ানটের যুগ্ন সম্পাদক জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জীবনে অপরিহার্য। সুখে-দুঃখে, সংকটে, বিপদে, সংগ্রামে রবীন্দ্রনাথই আমাদের আশ্রয়। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন, বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই। সময় পেরিয়ে যাওয়ার আগেই শিড় দাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হবে। ভয়কে কীভাবে অভয়ের মাধ্যমে জয় করতে হবে, সেই শিক্ষা রবীন্দ্রনাথ আমাদের দিয়েছেন।”
রবীন্দ্রনাথের নাটকের উক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা যেন আনন্দে বাঁচি, সদা থাকি আনন্দে। আমারা যেন মরার আগেই না মরি। বিপদ যদি আসে, তবে যেন ঘরের কোনে লুকিয়ে না থাকি। মানুষের জয় হোক।”
এবারের দুই দিনের উৎসবে সারা দেশ থেকে দুই শতাধিক শিল্পী অংশ নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
বক্তব্যের পর আবৃত্তি পরিবেশন করেন আঞ্জুমান আরা পর্ণা। এরপর সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে’। রবীন্দ্রসংগীতের সৃষ্টিধারায় বন্ধু উপবিভাগের গান থেকে পাঠ করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
প্রথম দিনের পুরো আয়োজন সাজানো হয় একক গান, দলীয় গান, পাঠ, আবৃত্তি ও নৃত্যছন্দে। মহুয়া মঞ্জরী সুনন্দা একক কণ্ঠে শোনান ‘তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভরে’। সত্যম্ কুমার দেবনাথ শোনান ‘অসীম ধন তো আছে তোমার’। পরে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় পাঠ করেন ‘ওহে অন্তরতম মুরতি নিত্যনব’।
তানিয়া মান্নান শোনান ‘শুধু তোমার বাণী নয় গো’, পার্থ প্রতীম রায় শোনান ‘আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে’। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় পাঠ করেন ‘আমার হিয়ার মাঝে তোমার গান তো গাই নি’।
অনুষ্ঠানে একক গান শোনান মোস্তাফিজুর রহমান তূর্য, সেঁজুতি বড়ুয়া, তাহমিদ ওয়াসীফ ঋভু, লাইসা আহমদ লিসা, আব্দুল ওয়াদুদ, সংযুক্তা দাস, ফারজানা আক্তার পপি, স্বাতী বিশ্বাস, মাকছুরা আখতার অন্তরা। এর ফাঁকে চলতে থাকে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের পাঠ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ফয়সাল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সম্মেলক গান ‘ওদের সাথে মেলাও যারা’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’ গানের সাথে একক নৃত্য পরিবেশন করেন সামিনা হোসেন প্রেমা। অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে ‘গানের ভিতর দিয়ে যখন’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করে সুরের ধারা’র শিল্পীরা। ছায়ানটের বড়দলের শিল্পীদের কণ্ঠে ‘জয় তব বিচিত্র আনন্দ, হে কবি’ গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের আয়োজন।
যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন তবলায় মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার, স্বরূপ হোসেন। সেতারে ফিরোজ খান। এস্রাজে অসিত বিশ্বাস। কীবোর্ডে ইফতেখার হোসেন সোহেল। মন্দিরায় প্রদীপ কুমার রায়।
ছায়ানট জানিয়েছে, মঙ্গলবার উৎসবের সমাপনী দিনের আয়োজন শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। পরিবেশিত হবে একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য, পাঠ-আবৃত্তি।
অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল অংশ নেবেন। ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত এই উৎসব সকলের জন্য উন্মুক্ত। একই সাথে অনুষ্ঠানটি ছায়ানটের ফেইসবুক পাতায় দেখা যাবে।