Published : 08 Jun 2025, 03:13 PM
‘টাকার রং কি কালো হয়?’—প্রশ্নটি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঝিনাইকুড়ি গ্রামের কৃষ্ণ কড়ার। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম কালো টাকা বলতে তিনি কি বুঝেন? পাল্টা প্রশ্নে কৃষ্ণ টাকার রং নিয়ে এই প্রশ্নটি করেন।
কৃষ্ণ বাংলাদেশের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার আদিবাসী জনগোষ্ঠী কড়াদের একজন। স্কুলের গণ্ডি পেরোতে না পারা এই মানুষটি ছোটখাট একটি চাকরি করেন। সেই সঙ্গে চাষাবাদও।
কৃষ্ণের পাল্টা প্রশ্ন শুনে মনে পড়ল আমি তো পৃথিবীর অনেক দেশের মুদ্রা দেখেছি, কোথাও কখনও কালো রঙের কোনো টাকা দেখিনি।
কৃষ্ণের মতো আরও জনা দশেক কৃষক, শ্রমিক, ছোট চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপ করেছি মূলত নিজের বোঝাপড়াকে আরও শানিত করার জন্য। জানতে চেয়েছি তাদের দৃষ্টিতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি কতটা অর্থবোধকতা ধারণ করে।
দিনাজপুর শহরের অদূরের মাতাসাগর এলাকার শেখপুরা গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক এক কথায় কালো টাকা বলতে অবৈধ টাকাকে বুঝে থাকেন। শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম রাজাপুকুরের আবদুর রউফ শাহ কালো টাকা বলতে ঘুষের টাকা মনে করেন এবং ঘুষ-দুর্নীতির জন্য তিনি দায়ী করেন মূলত আমলাদের। আর শহরের কে বি এম কলেজর বিবিএ অনার্স পড়ুয়া নাইম আল রশিদও কালো টাকা বলতে অবৈধ অর্থকেই বুঝে থাকেন। তবে নাইম জানেন, যে টাকার কর দেওয়া হয় না, যে টাকা উৎকোচের নামে ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যে টাকা ব্যবসায় কর ফাঁকি দিয়ে জমি রাখা হয়, তাই কালো টাকা। তার বক্তব্য—“আমদানি রপ্তানি নীতি অনুযায়ী টাকাকে ডলারে রূপান্তরে মাধ্যমে এলসি খুলে পণ্য আমদানি করা হয়। যখন একদিকে সরকারের অর্থ ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তাকে ফাঁকি দিয়ে লাইসেন্সিং ও ভালো পোর্টফোলিও তৈরি করে ওভার ভ্যালুড পলিসি দিয়ে দেশ থেকে অবৈধ অর্থ বিদেশে পাঠানো হয়. অন্য দিকে আন্ডার রেইটেড পলিসি ব্যবহার করে বিদেশে অর্জিত ডলার সেই দেশে রেখে হুন্ডি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তখন দেশ ডলার সংকটে পড়ে এবং রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হয়।”
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে নাইম বিচলিত হলেও অন্যরা একেবারেই বিচলিত নন, বরং সারের দাম কমবে কিনা, কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হবে কিনা, এগুলো তাদের ভাবনা। তাদের তিন জনই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। রাজ্জাক ও রউফের চেয়ে নাইমের ভাবনা এগিয়ে আছে, নাইম শিক্ষা উপকরণ এবং শিক্ষার ব্যয় নিয়েও ভাবেন।
বাস্তবতা হলো, ‘কালো টাকা’ শব্দবন্ধ এই সব সাধারণ মানুষ ব্যবহার করেন না। কিন্তু এই শব্দের অন্তর্নিহিত ধারণাটি ঠিকই বুঝতে পারেন। সাধারণ মানুষ এর অর্থ বোঝেন ‘চুরি করা টাকা’, ‘নেতার বিদেশে পাঠানো টাকা’, ‘গাড়ি-বাড়ি করার টাকা’—এই সব রূপকে। তারা অর্থনৈতিক পরিভাষায় নয়, বরং ন্যায্যতা ও শোষণের বাস্তব অভিজ্ঞতায় কালো টাকার চেহারা চিনেন।
এই উপলব্ধি একধরনের নৈতিক প্রতিরোধও তৈরি করে। ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ গভার্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ দুর্নীতিকে রাষ্ট্রের ‘অবিচার প্রক্রিয়ার অংশ’ হিসেবে দেখে—তারা এটিকে সহ্য করে, এড়িয়ে চলে, কিন্তু মেনে নেয় না। সুযোগ পেলে প্রতিবাদ করে। মাঠে নেমে ৫ অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের মতো অভ্যুত্থানকে সফল করতে ভূমিকা রাখে।
সুতরাং বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সিদ্ধান্ত শুধু অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, প্রান্তিক জনগণের কাছেও একটি প্রতীকী অবিচার বলে প্রতিভাত হয়।
অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাংলাদেশে একপ্রকার নিয়মিত বাজেট-অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেও এই সুবিধা রাখা হয়েছে, যা বাংলাদেশে এ পর্যন্ত অন্তত ২২ বার পুনরাবৃত্ত হয়েছে। প্রতি বছর বাজেট ঘিরে যখন জনগণের প্রত্যাশা ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন সামনে আসে, তখন এই সুযোগটি যেন রাষ্ট্রীয় দুর্বলতার প্রতীক হয়ে হাজির হয়। অথচ গবেষণা, বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং অর্থনীতিবিদদের মতামতের আলোকে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে—এই ব্যবস্থার অর্থনৈতিক কার্যকারিতা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ, তেমনি এর নৈতিক ও রাজনৈতিক বার্তাও মারাত্মক নেতিবাচক।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পক্ষে যুক্তি হিসেবে সরকার সাধারণত বলে থাকে—এতে বাজারে তারল্য আসে, বিনিয়োগ বাড়ে, রাজস্ব আয় বাড়ে এবং অপ্রচলিত অর্থনীতির বাইরে থাকা বিপুল অর্থ দেশের মূলধারায় প্রবেশ করে। এইসব যুক্তি শুনতে ভালো শোনালেও বাস্তবতা ভিন্ন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ—টিআইবিসহ বহু সংস্থা এবং স্বাধীন গবেষকদের গবেষণায় বহুবার উঠে এসেছে, এই ধরণের সুযোগ থেকে রাজস্ব আয়ে খুব বেশি ইতিবাচক ফল পাওয়া যায় না। ২০২১ সালে টিআইবির একটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সালের আগের এক দশকে যেসব সময় এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার বিপরীতে কালো টাকা মালিকদের খুব অল্প অংশই এই সুযোগ গ্রহণ করেছেন। বরং, টিআইবির মতে, এই ধরনের উদ্যোগ কর আইন ও নৈতিকতার পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রতি বছরই বাজেট পর্যালোচনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে সমালোচনা করে আসছে। তারা এ সিদ্ধান্তটিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হিসেবে দেখছে। এতে করে নিয়মিত করদাতাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয় এবং ভবিষ্যতে তারা কর দেওয়ায় অনীহা বোধ করতে পারেন বলে সতর্ক করেছে সিপিডি। এটি দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করার অনানুষ্ঠানিক অনুমোদন বলে মনে করা হয়।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বারবার বলেছেন, কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ রাষ্ট্রের কর ন্যায়বিচারবিরোধী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। তার ভাষায়, “এটি হচ্ছে ভালো আচরণের শাস্তি আর খারাপ আচরণের পুরস্কার।” তিনি সতর্ক করেছেন যে, এর ফলে সামাজিক চুক্তির ভিত্তি দুর্বল হয় এবং জনগণের মধ্যে রাষ্ট্রীয় নীতির প্রতি আস্থা কমে যায়। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের পর অর্থনীতির হালচাল জানার জন্য গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর শ্বেতপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ।”
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে বাজেট দিয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেবপ্রিয়। তার বক্তব্য—“দুর্ভাগ্যবশত, এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রায় নয় মাস হয়ে গেছে, তবুও সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো অর্থবহ বা সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এই বাজেটে আগের মতো ত্রুটিপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।”
২ ডিসেম্বর শ্বেতপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় বলছিলেন, আইন সভা, নির্বাহী বিভাগসহ সবাই গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে চুরির অংশ হয়ে গিয়েছিল। এটাই চোরতন্ত্র। এ জন্য রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং উর্দি পরা কিংবা উর্দি ছাড়া আমলারা সহযোগী হয়েছিল। অর্থাৎ তার কথার সারাংশ হলো, এমপি, মন্ত্রী, আমলা কিংবা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলা বিশাল এক জনগোষ্ঠী দুর্নীতি করার সুযোগ নিয়েছিল।
সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। এই সরকারের কাছে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মতো মতো সাধারণ মানুষের এমন প্রত্যাশা ছিল।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়াকে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ রাষ্ট্রের দেউলিয়া নৈতিকতা এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে মনে করেন। যেহেতু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়াতেন এবং বামধারার রাজনীতি করেন, শিক্ষক ও রাজনীতিক হিসেবে তত্ত্ব, রাজনীতি ও অর্থনীতির সংযোগস্থলে কাজ করছেন অনেক দিন ধরে, তাই তার বক্তব্যকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা যায়।
আনু মুহাম্মদ বলেন, “যে রাষ্ট্র নিয়মিত করদাতার বদলে দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করে, সে রাষ্ট্র আসলে দুর্নীতিকে তার নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে।” তার মতে, বাজেটের মাধ্যমে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আসলে লুটেরাদের জন্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে, এবং এটি জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিশ্বাসঘাতকতা। একাধিক বক্তৃতা ও লেখায় তিনি এই প্রক্রিয়াকে ‘দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
অর্থনীতির অনেক মৌলিক নীতির সঙ্গে কালো টাকা সাদার করার মতো সাংঘর্ষিক এই ব্যবস্থাটিকে ২০২৫-২৬ সালের বাজেটেও রাখা হয়েছে। কেউ হয়তো জানতে চাইতে পারেন, আগের মতো তো ব্যাপক সুযোগ রাখা হয়নি এবার। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অভিমত সাদামাটা, আমরা মনে করি একটি দেশ যদি ন্যায়ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে চায়, তবে তাকে কর-নীতি এমনভাবে সাজাতে হবে যেখানে নিয়মিত করদাতারা প্রণোদনা পাবেন, আর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অথচ বাংলাদেশে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে উল্টো চিত্র তৈরি হয়েছে। যারা নিয়মিত কর দেন, তারা নিজেদের বোকা ভাবেন—কারণ রাষ্ট্র তাদের কোনো প্রণোদনা না দিয়ে বরং কর ফাঁকিদাতাদের জন্য সুযোগ নিশ্চিত করে।
আগেই বলেছি, কালো টাকাকে সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে অন্তত ২২ বার। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এককালীন ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা হলেও, সেটি ছিল সামগ্রিক অপ্রদর্শিত অর্থনীতির ক্ষুদ্রাংশ মাত্র। বাস্তবে অপ্রদর্শিত অর্থনীতির আকার বাংলাদেশে মোট জিডিপির ৩০ শতাংশেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কালো অর্থনীতির পরিমাণ প্রায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য, যা দেশের বার্ষিক বাজেটের প্রায় সমান। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থের খুব অল্পই সরকার আনতে সক্ষম হচ্ছে।
এই ব্যর্থতার পেছনে মূল কারণ হলো—যারা কালো টাকার মালিক, তারা জানেন এই টাকা সাদা করার সুযোগ বারবার ফিরে আসবে। রাষ্ট্র কখনোই কঠোরভাবে কর আইনের প্রয়োগ করে না। ফলে তারা অপেক্ষা করেন, ভবিষ্যতের অন্য কোনো বাজেটে আরও সহজতর কোনো প্রক্রিয়া বের করা হয় কিনা, যার মাধ্যমে টাকা বৈধ করা সুযোগ পাবেন।
তবে শুধু অর্থনৈতিক যুক্তি দিয়ে এই বিষয়টি পুরোপুরি বোঝা যায় না। এটি একান্তভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যে কোনো সরকারের বাজেটই একদিকে যেমন অর্থনৈতিক নকশা, তেমনি এটি রাজনৈতিক সংকেতও বহন করে। বাংলাদেশে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ মূলত রাখা হয় রাজনৈতিক স্বার্থে। এটি রাজনৈতিক দল, ক্ষমতাসীন শ্রেণি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মধ্যকার বোঝাপড়ার অংশ। অনেক সময় নির্বাচনি খরচের টাকা, অবৈধ লভ্যাংশ এবং রাজনৈতিকভাবে অনুগত ব্যবসায়ীদের অনৈতিক আয়ের নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করতেই এই বিধান রাখা হয়। এর মাধ্যমে সরকার যেমন সাময়িকভাবে কিছু অর্থ বাজারে আনতে পারে, তেমনি তাদের অনুগত গোষ্ঠীকেও পুরস্কৃত করে। কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হয় কর-নীতির বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈধতা এবং সামাজিক ন্যায়ের অবক্ষয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটটি এমন একটি রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রণীত হয়েছে, যেখানে সরকার ব্যবস্থার কাঠামো ও চরিত্র আগের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এই ভিন্নতাজনিত কারণে আমাদের মতো আমজনতার প্রত্যাশা ছিল, কালো টাকা বৈধ করার মতো বিতর্কিত ও দুর্নীতিপ্রবণ সুযোগ এবার আর থাকবে না। কারণ এই সরকার জাতীয় স্বার্থ, সুশাসন ও দুর্নীতিবিরোধী বার্তা দিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে। কিন্তু বাজেট ঘোষণার পর দেখা গেল, পুরনো ধারা বহাল আছে। এর ফলে মানুষের মধ্যে একধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে এবং ধারণা জন্মেছে, এই সরকারও কার্যত আগের নীতিই অনুসরণ করছে—শুধু নতুন বন্দোবস্তের নামে, ভিন্ন মোড়কে।