Published : 07 May 2025, 05:38 PM
সংস্কার কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইসলামী আন্দোলন।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, “বিগত ৫৪ বছর যে রাষ্ট্র চলেছে, আমরা সেই রাষ্ট্র দেখতে চাই না। নতুন যে রাষ্ট্রের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের সন্তানরা রক্ত দিয়েছেন, সেটার জন্য যা করনীয় তাই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে করতে হবে। কারণ আমরা অতীতে দেখেছি রাজনৈতিক সরকারগুলো আসলে আমাদের হতাশ করেছে।
“আজকে নির্বাচন কমিশন কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, যেহেতু একটা সংস্কারের কার্যক্রম চলছে। তারা কোন বিধানের আলোকে, কোন নীতির ভিত্তিতে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, এটা কিন্তু আমাদের কাছে বড় প্রশ্ন আকারে দেখা দিয়েছে।”
আতাউর রহমান বলেন, “আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, প্রয়োজনী মৌলিক সংস্কার করা। অনেকে বলছেন, ন্যূনতম কিছু সংস্কার শেষে নির্বাচন। না, শুধু নির্বাচনের জন্য এত প্রাণ বিসর্জন হয়নি। আর শুধু নির্বাচন হলেই দেশ সঠিকভাবে পরিচালিত হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।”
তিনি বলেন, “অতীতে ভালো নির্বাচনের পরও দেশে সুশাসন আসেনি, বরং নির্বাচিত সরকারও স্বৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ হয়েছে।”
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে।
সংলাপে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান,যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, প্রচার সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ।
স্বাগত বক্তব্য জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, “সকলে মিলে একটি রাষ্ট্র বিনির্মানের আমরা সুযোগ পেয়েছি। সেখানে আমাদের, জনগণের প্রত্যাশা, যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রত্যাশাকে ধারণ করে, আমরা যেন একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি।
“সেই চেষ্টাটাই হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা ভাবেন, সবগুলো হবে না। দলগুলোকে ছাড় দিয়ে আলোচনা করে, জাতি-রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে।”