Published : 30 May 2025, 01:19 PM
নিম্নচাপের প্রভাবে দু-দিনের টানা বৃষ্টিতে শরীয়তপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ও জলাবদ্ধতায় ব্যাহত হচ্ছে মানুষের চলাচল। বাজারগুলো ক্রেতা শূন্য থাকায় ধস নেমেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
বুধবার রাত থেকে জেলায় অবিরাম দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বেগে বৃষ্টি ঝরছে। এতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল, পৌর শহরের নিরালা আবাসিক এলাকা, শান্তি নগর, হরিসভা, বাঘিয়া, বাসস্ট্যান্ড ও দার্সাত্তা এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে।
এছাড়া পালং উত্তর বাজার ও কোতোয়াল বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিতে অনেকের মাছের ঘেরও ভেসে গেছে।
তবে শরীয়তপুরে কোনো আবহাওয়া কেন্দ্র না থাকায় জেলায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মাঠ, সিভিল সার্জন অফিস এলাকা, জেলা ডাকঘরের সামনে, শরীয়তপুর পৌরসভার পেছনে, সাবনুর মাকের্ট ও চর পালং এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে।
ওইসব এলাকার অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
বৃষ্টিতে বাজারগুলো ছিল ক্রেতা শূন্য। ক্রেতা না থাকায় অনেকেই দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। এ পরিস্থিতিতে কাজ না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আবদুর মোশারফ হোসেন বলেন, হাসপাতালের সামনে হাঁটু পানি হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ডুকতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ি। এর মূল কারণ হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা।
“বিশেষ করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সামনে ময়লাযুক্ত পানির মধ্য দিয়ে আসা-যাওয়া রোগীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে ।”
শরীয়তপুর পৌরসভার হরিসভা এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ আমেনা বেগম বলেন, “ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে রান্নাবান্না বন্ধ ছিল। শুকনা খাবার খেতে হয়েছে। এখন বাবার বাড়ি যাচ্ছি, এখানে থাকার পরিবেশ নেই।”
শরীয়তপুর শহরের উত্তর বাজার রিকশা চালক কাইউম বেপারী বলেন, “দুদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। রাস্তাঘাটগুলো এমনিতেই ভাঙা, তার উপর বৃষ্টিতে গর্ত হয়ে গেছে। পানিতে সড়কের গর্ত দেখা যায় না। রিকশা চালাতে গেলেও উল্টে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।”
তারপরও পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন বলে জানান এই শ্রমজীবী।
এদিকে টানা বৃষ্টি হলেও পদ্মা নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান।