Published : 06 Jul 2025, 01:50 PM
রেফারির শেষ বাঁশি যেন ছিল প্রাণভরে শ্বাস নেওয়ার সঙ্কেত। রুদ্ধশ্বাস কিছু মিনিটের সমাপ্তি। কোনোরকমে রক্ষা পাওয়ার স্বস্তি। হাঁপ ছেড়ে যেন বাঁচল রেয়াল মাদ্রিদ। সহজ ম্যাচ কঠিন বানিয়ে ভজকট পাকিয়ে ফেলেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জিততে পেরেছে তারা। জয়ের পর শেষের ওই শঙ্কার সময়টা থেকেই পরের ম্যাচে সম্ভাবনার রসদ খুঁজে পাচ্ছেন কোচ শাবি আলোন্সো।
ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল ম্যাচটিতে দশম মিনিটে গন্সালো গার্সিয়ার গোলে এগিয়ে যায় রেয়াল মাদ্রিদ। এই টুর্নামেন্টে সাড়া জাগানো তরুণ ফরোয়ার্ডের এটি চতুর্থ গোল। মিনিট দশেক পর ব্যবধান বাড়ান ডিফেন্ডার ফ্রান গার্সিয়া।
সেই ব্যবধান ধরে রেখেই নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে যায় রেয়াল। যোগ করা সময়ে গিয়ে খেলায় হুট করেই শুরু হয় ধুন্ধুমার উত্তেজনা। বাড়তি সময়ের তৃতীয় মিনিটে একটি গোল শোধ করে বরুশিয়া।
দুই মিনিট পর দুর্দান্ত ডাইভিং ভলিতে গোল করে আবার দুই গোলের ব্যবধান করে নেন বদলি নামা কিলিয়ান এমবাপে। কিন্তু মিনিট দুয়েক পরই ডর্টমুন্ডের ফরোয়ার্ড সেহু গিহাসিকে পেছন থেকে টেনে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন রেয়ালের ডিন হাউসেন। পেনাল্টি থেকে আবার ব্যবধান কমায় ডর্টমুন্ড।
যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল জার্মান দলটি। বক্সের ভেতর থেকে মার্সেল সাবিৎজারের গতিময় শট অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে রেয়ালকে রক্ষা করেন গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া। শেষ বাঁশি বাজে পরমুহূর্তেই।
ম্যাচের পর আলোন্সো বললেন, শেষ ১০ মিনিটেই সব গড়বড় করে ফেলেছিল তার দল। তবে এখান থেকে দল শিখবে বলেও আশা তার।
“আমরা ভালো খেলছিলাম, স্কোরলাইন থেকে শুরু করে সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। শেষ ১০ মিনিটে ম্যাচ পাগলাটে হয়ে ওঠে। আমরা ফিটনেস হারিয়ে ফেলি কিছুটা, তাড়না ও একাগ্রতাও হারিয়ে ফেলি। সৌভাগ্যবশত, আর গোল হজম করিনি।”
“হয়তো শেষের ১৫ মিনিট বাজে খেলাটা আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে। এসব থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং পরেরবার আরও অনেক সতর্ক থাকতে হবে। সব মিলিয়ে পারফরম্যান্স ভালো ছিল ৮০ মিনিট পর্যন্ত। শেষ ১০ মিনিটের পারফরম্যান্সে আমাদের উন্নতি করতে হবে।”
টুর্নামেন্টজুড়ে চমকপ্রদ পারফর্ম করে চলা গন্সালো গার্সিয়াকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা আগেও বলেছিলেন রেয়াল কোচ। এই ম্যাচের পরও তার কণ্ঠে স্তুতি ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে নিয়ে।
“গন্সালো গার্সিয়া দলের জন্য দুর্দান্ত পারফর্ম করছে। দলকে সহায়তা করছে, পেনাল্টি বক্সে সঠিক পজিশনে সে থাকছে। সে সত্যিকারের স্ট্রাইকার এবং তার পারফরম্যান্সে আমরা মুগ্ধ।”
রেয়ালের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা এখন সামনে। বুধবার সেমি-ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ এই মৌসুমে ইউরোপের সেরা দল পিএসজি। সেই লড়াইয়ে রেয়াল পাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলা হাউসেনকে। তবে আলোন্সোর বিশ্বাস, ডর্টমুন্ডকে হারানোর সুবাস নিয়ে এই চ্যালেঞ্জেও উতরে যাবে তার দল।
“পিএসজির সঙ্গে লড়াই, আমাদের জন্য এটা হবে বড় এক চ্যালেঞ্জ। তবে আজকের ম্যাচ থেকে ইতিবাচকতা বয়ে নিয়ে আমরা পরের ম্যাচে মাঠে নামব।”