Published : 06 Jul 2025, 03:45 PM
ম্যাচের মাঝপথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রেশ প্রবলভাবে রয়ে গেল অনেক পরেও। জামাল মুসিয়ালার চোট পাওয়ার ওই দুর্ঘটনা নিয়ে ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ ঝাড়লেন বায়ার্ন মিউনিখ কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি।
একই ঘটনায় বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার তো সরাসরি তীর তাক করেছেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের দিকে। তার মতে, মুসিয়ালার এই চোটের জন্য কিছুতেই দায় এড়াতে পারে না পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
আটলান্টায় শনিবার দিজিরে দুয়ে ও উসমান দেম্বেলের লক্ষ্যভেদে বায়ার্নকে ২-০ গোলে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ওঠে লুইস এনরিকের দল। ম্যাচের বিরতির ঠিক আগে পিএসজির বক্সে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর ওই চোট পান মুসিয়ালা।
বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার উইলিয়ান পাচোকে চ্যালেঞ্জ জানান মুসিয়ালা, ওই মুহূর্তে গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা দুর্ঘটনাবশত মুসিয়ালার পা মাড়িয়ে দেন। তাতে বাঁ পায়ের অ্যাঙ্কেলে খুব আঘাত পান তরুণ মিডফিল্ডার। মাঠে কিছুক্ষণ চিকিৎসা নেওয়ার পর মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
পরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উঠতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কোম্পানি। দল খুব বাজে খেললেও সচরাচর তাকে এমনটা দেখা যায় না।
“বিরতির সময় আমি খুব কমই এতটা ক্ষুব্ধ হই, নিজের খেলোয়াড়দের দিকে নয়। জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, এটার চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই ছেলেদের জন্য এটাই (ফুটবল) তাদের জীবন।”
“আর জামালের মতো একজন এটাকে ঘিরেই বেঁচে থাকে…এবং যখন এমন কিছু এভাবে ঘটে যায়, তখন নিজেকে খুব নিরুপায় মনে হয়…এখন আমি আপনাদের সামনে বসে আছি, তারপরও ওই ঘটনা মনে করে আমার প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে এবং সেটা ম্যাচের ফলের জন্য নয়। আমি বুঝি যে, এটা ফুটবল। কিন্তু ঘটনাটা এমন একজনের সঙ্গে ঘটেছে, যে খেলাটাকে খুব উপভোগ করে এবং আমাদের জন্যও সে খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ছুটে যায় বায়ার্নের মেডিকেল টিম। সেই সময় দোন্নারুম্মাকে বাস্তবিক অর্থেই কাঁপতে দেখা যাচ্ছিল, মুসিয়ালার চোটের মাত্রা বুঝতে পেরে হতাশা আর অবিশ্বাসে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছিলেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক।
ম্যাচের পর নয়ার কোনোরকম রাখঢাক না করেই দোন্নারুম্মাকে দোষারোপ করেন। তখন প্রতিপক্ষকে গোলরক্ষককে সরাসরি তা বলেছিলেন বলেও জানান তিনি।
“এমন পরিস্থিতিতে কারো ওভাবে যাওয়া ঠিক নয়। এটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং সে প্রতিপক্ষকে চোটে ফেলার ঝুঁকি নিতে প্রস্তত ছিল।”
“তার কাছে গিয়ে আমি তখন বলেছিলাম, ‘তুমি কি আমাদের খেলোয়াড়ের কাছে যেতে চাও না?’ (ওই অবস্থায় চোট পাওয়া) খেলোয়াড়ের কাছে গিয়ে তাকে শুভকামনা জানানোটাই সঠিক। শেষ পর্যন্ত সে (দোন্নারুম্মা) তা করেছে। ন্যায্যতা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ…আমিও একটু ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারতাম।”
পরে দোন্নারুম্মা এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, “জামাল, তোমার জন্য আমার শুভকামনা এবং (তোমার সুস্থতার) প্রার্থনা করি।”
বায়ার্নের পক্ষ থেকে এখনও মুসিয়ালার চোটের ধরণ বা তার বাইরে থাকার সম্ভাব্য সময় নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে জার্মান পত্রিকা বিল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসিয়ালার সুস্থ হয়ে ফিরতে পাঁচ মাসের মতো সময় লাগতে পারে।