Published : 02 Jul 2025, 04:10 PM
হোয়াইট হাউসের ইমেইলের এক বিশাল ভাণ্ডার ফাঁসের হুমকি দিয়েছে ‘ইরান সংশ্লিষ্ট’ হ্যাকারদের একটি দল।
সোমবার হ্যাকার দলটি হুমকি দিয়েছে, হোয়াইট হাউসের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও উপদেষ্টাদের কাছ থেকে চুরি করা ইমেইল ফাঁস করে দেবে তারা, যেটি সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে চলমান লড়াইয়ের সর্বশেষ ঘটনা।
এর আগে ওই হ্যাকার দলটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা দলের কাছ থেকে চুরি করা কিছু তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এর কয়েক মাস পর হ্যাকার দলটি রয়টার্সকে বলেছে, প্রায় ১০০ গিগাবাইট আকারের ইমেইল সংগ্রহ করেছে তারা। এসব ইমেইল হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সুজি উইলস, ট্রাম্পের আইনজীবী লিন্ডজি হ্যালিগান, উপদেষ্টা রজার স্টোন ও পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া হয়েছে, যা এখন ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা।
“রবার্ট” নামের এই হ্যাকার দলটি এ সাইবার হামলার দায় স্বীকার করলেও রয়টার্সকে এসব ইমেইলের নির্দিষ্ট কোনও তথ্য দেয়নি দলটি। তবে তারা বলেছে, এ চুরি করা তথ্য বিক্রির কথা ‘ভাবছে’ তারা।
ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে জড়িত বা দেশটির সরকার-সমর্থিত হ্যাকাররা মার্কিন বিদ্যুৎ, পানি, যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর সাইবার হামলা চালাতে পারে। ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পরই এ হ্যাকিংয়ের ঘটনাটি প্রকাশ্যে এল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
হোয়াইট হাউস ও এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট, তার সহকর্মী ও আমাদের সাইবার নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সব ধরনের হুমকিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে” দেখছে তারা। প্রেসিডেন্টের কাজ যাতে ঠিকঠাক হয় তা নিশ্চিত করা তাদের “সবোর্চ্চ অগ্রাধিকার”।
ওই বিবৃতিতে প্যাটেল বলেছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত যেই হোক না কেনো তাকে কড়া তদন্তের আওতায় আনা হবে এবং আইনে কঠোর শাস্তিও দেওয়া হবে তাকে।”
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি বিভিন্ন হ্যাকার দলের কাছ থেকে একই ধরনের সাইবার হামলার শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ফোন থেকে তথ্য চুরির চেষ্টা করেছিল চীনের সঙ্গে জড়িত হ্যাকাররা। একই সময়ে ‘রবার্ট’ নামের হ্যাকার দলটি ট্রাম্পের প্রচারাভিযান দলের কাছ থেকে সংগৃহীত অনেক ইমেইল তথ্য চুরি করে তা সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস করে দিয়েছে, যার মধ্যে আমেরিকান রাজনৈতিক পরামর্শদারজার স্টোনের কিছু ইমেইলও ছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
এক বিবৃতিতে ‘সাইবারসিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি’র জনসংযোগ পরিচালক মার্সি ম্যাকার্থি বলেছেন, “এ তথাকথিত সাইবার আক্রমণ ডিজিটাল প্রোপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং সাইবার হামলার বিভিন্ন টার্গেটও কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়।”
ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক স্থাপনাতে ট্রাম্পের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, যা সাইবার আক্রমণের হুমকিও বাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, তেহরানের সঙ্গে জড়িত হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন অন্যান্য আমেরিকান বিভিন্ন কোম্পানির কাজ ব্যাহত করার চেষ্টা করতে পারে।