Published : 22 May 2025, 05:35 PM
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে প্রবল বৃষ্টির পর আকস্মিক বন্যায় অন্তত তিনজনের মৃত্যু হযেছে। এ বন্যার কারণে বেশ কয়েকটি ছোট শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েক হাজার বাসিন্দা আটকা পড়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরও বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়ে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসের হান্টার ও মিড নর্থ কোস্ট অঞ্চলের অনেকগুলো গ্রামীণ শহর বড় ধরনের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার মিড নর্থ কোস্টের অধিকাংশ অঞ্চলে ফের ভারি বৃষ্টি শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সিডনি থেকে ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি উত্তরে ট্যারি শহরের কাছে ৬৩ বছর বয়সী এক পুরুষের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মিড নর্থ কোস্টে বন্যার পানিতে ত্রিশোধ্র্ব আরেক পুরুষের মৃতদেহ পাওয়া গেছে; ইনিই হড়কা বানে নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কফস হারবারের পশ্চিমে নিজ গাড়িতে ৬০ বছর বয়সী এক নারীর মৃতদেহ পাওয়া পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে এই নারীকে বন্যার পানির মধ্য দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন এক কর্মকর্তা। কিন্তু তিনি সতর্কতা অগ্রাহ্য করে গাড়ি চালিয়ে যান আর আটকা পড়েন, তখন সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জরুরি বিভাগের কর্মীরা ওই সময় তার অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা আরেকজন নিখোঁজ পুরুষের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী ক্রিস মিন্স এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, “এই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভয়াবহ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বন্যার ১৪০টি সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়। ওই এলাকায় ৫০ হাজার মানুষ আছেন। তাদের সরে আসার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারেন। ওই এলাকায় ৯৫০০টি সম্পত্তি আছে।”
বৃহস্পতিবার ওই এলাকাগুলোর শতাধিক স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে।
এক বয়স পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মী নিকোল সামেট রয়টার্সকে জানিয়েছেন মিড নর্থ কোস্টের কান্ডেলটাউন এলাকাটি বন্যায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জরুরি পরিষেবার টিমগুলো তাদের কেন্দ্রটিকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার কাজ করতে এখানে আসি আমি আর যেতে পারিনি। আমরা পাহাড়ের উপরে আছি কিন্তু আমাদের পেছনে সবাই পানির নিচে। আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। এতো উঁচুতে পানি উঠতে কখনো দেখিনি।”
জরুরি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্যারির নিকটবর্তী ম্যানিং নদীর পানি বেড়ে ১০০ বছরের বন্যার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।