Published : 28 Oct 2024, 06:25 PM
ভারতের রাজধানী দিল্লির বাতাসে গত কয়েকদিনে দূষণ মারাত্মক খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার চেয়ে ২৫-৩০ গুণ বেশি ছিল।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার দীপাবলিতে বাজি ফাটানো এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে ফসলের জমি পরিষ্কার করতে খড় পোড়ানোর কারণে আগামী দিনগুলোতে আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
প্রতি বছর অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে দিল্লি এবং উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি শহরে বায়ু দূষণ চরম পর্যায় যায়। ফলে নাগরিক জীবনে নানান জটিলতার সৃষ্টি হয়।
সরকার পরিচালিত ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) মাত্রা (যা ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে) সোমবার কিছু এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে ৩৫০ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছেছে।
ওয়েবসাইট অনুসারে, পিএম ২.৫-এর মাত্রা ৩০০ থেকে ৪০০-তে পৌঁছালে বাতাসের গুণমানকে দূষণের সর্বোচ্চ পর্যায় ধরা হয়। পিএম সীমাটি ৪০০-৫০০ অতিক্রম করলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
যানবাহনের ধোঁয়া, রাস্তার ধুলোবালি, বাতাসের কম গতি এবং ফসলের খড় পোড়ানোর কারণে প্রতি শীতে দিল্লি ধোঁয়াশার ঘন চাদরে ঢেকে যায়।
নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা ফসলের খড় পুড়িয়ে তারা তাদের ফসলী জমি পরিষ্কার করেন।
কৃষকেরা বলছেন, ফসলের অবশিষ্টাংশ পরিষ্কার করার বিকল্প উপায় খুঁজে বের করার জন্য তাদের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দরকার। তবে সরকারী প্রকল্পগুলো এখনও কার্যকর হয়নি।
দীপাবলির সময় আতশবাজি থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
প্রতি বছরের মতো এবারও দিল্লি সরকার উৎসবের আগে আতশবাজি উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
তবে অতীতে এই জাতীয় নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি, কারণ লোকেরা অন্য রাজ্য থেকে আতশবাজি সংগ্রহ করে।
দিল্লি সরকার দূষণ মোকাবেলায় গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানও কার্যকর করেছে, যা জিআরএপি নামে পরিচিত।এটি কয়লা এবং জ্বালানি কাঠ ব্যবহারের নিষিদ্ধকরণের পাশাপাশি অল্প জরুরি পরিষেবাগুলোর জন্য ডিজেল জেনারেটর ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্ত ক্রিয়াকলাপ নিষিদ্ধ করে।
দিল্লির বাসিন্দাদের যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি, কতৃপক্ষ যানবাহনের কালো ধোঁয়া নির্গমন কমাতে জনগণকে গণপরিবহন ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।