Published : 10 Sep 2024, 10:22 AM
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি ‘মানবিক অঞ্চলে’ ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, খান ইউনিসে হামাস যোদ্ধাদের একটি ‘অপারেশন সেন্টারে’ হামলা চালিয়েছে তাদের বিমান। বেসামরিক লোকজনের ‘ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে’ এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে ‘মানবিক অঞ্চল’ ঘোষিত আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুতদের আবাসস্থল (তাঁবু) লক্ষ্য করে তিনটি হামলা চালানো হয়। তাতে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে।
হামাসের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অপারেশন) বিবিসিকে বলেছেন, হামলায় ৪০ জন নিহত ও ৬০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন, অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যরাতের পরপরই আল-মাওয়াসি এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনের শিখা আকাশে উঠতে দেখা যায়।
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বসবাসকারী একটি দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক খালেদ মাহমুদ বলেন, তিনি এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীরা সাহায্যের জন্য ছুটে এসেছিলেন কিন্তু ধ্বংসের ব্যাপকতা দেখে স্তব্ধ হয়ে যান।
মাহমুদ বলেন, “হামলায় সাত মিটার গভীর তিনটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং ২০টিরও বেশি তাঁবু চাপা পড়েছে।”
যাচাই করা যায়নি এমন একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমান হামলার কারণে সৃষ্ট গভীর গর্ত থেকে ফিলিস্তিনিদের উদ্ধার চেষ্টায় হাত দিয়ে বালি খুঁড়ছে বেসামরিক লোকজন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক মুখপাত্র টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, তারা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হামাসের হোতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, যারা খান ইউনিসের মানবিক অঞ্চলে ‘ছদ্মবেশে একটি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল কমপ্লেক্সে’ কাজ করছিল।
"হামলার আগে বেসামরিক নাগরিকদের সম্ভাব্য ক্ষতি কমাতে না ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল; যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল অস্ত্রের নির্ভুল ব্যবহার, বিমান হামলা এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য।"
ওই মুখপাত্র বলেন, “ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং আইডিএফ বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে গাজা উপত্যকায় মানবিক অঞ্চলসহ বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহারের এটি আরেকটি উদাহরণ।”
তবে ওই এলাকায় যোদ্ধাদের উপস্থিতির দাবি প্রত্যাখ্যান করে হামাস এই বক্তব্যকে 'নির্জলা' মিথ্যাচার বলে বর্ণনা করেছে।
"বেসামরিক মানুষের সমাগমস্থলে অবস্থান বা সামরিক উদ্দেশ্যে এমন জায়গা ব্যবহারের কথা বরাবরই অস্বীকার করেছে প্রতিরোধকারীরা (হামাস)।”
গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হলে খান ইউনিসের হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার জবাবে এই স্থল অভিযান শুরু হয়। ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় তাদের প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয়, জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে।
তার বিপরীতে গাজায় এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।