Published : 09 Jun 2025, 01:02 AM
ইতালিতে নাগরিকত্বের নিয়ম-কানুন সহজ করা এবং শ্রমিক সুরক্ষা আরও জোরদার করার প্রশ্নে গণভোট শুরু হয়েছে।
রোববার (৮ জুন) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে সোমবার পর্যন্ত। শ্রম বাজার সংক্রান্ত চারটি এবং নাগরিকত্ব বিষয়ে একটি নিয়ে মোট পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে এই ভোট দিচ্ছে ইতালীয়রা।
গণভোটে নাগরিকত্বের বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছে। কারণ, ইতালিতে অভিবাসনের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগই ২০২২ সালে ক্ষমতায় বসিয়েছিল জর্জিয়া মেলোনির অভিবাসনবিরোধী কোয়ালিশনকে।
গণভোটের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রস্তাবটি হচ্ছে- বিদেশি নাগরিকদের জন্য ইতালির নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদনের পূর্বে সেদেশে বসবাসকাল ১০ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছরে নামিয়ে আনা। ব্যালট পেপারে ইতালীয়রা এ প্রস্তাব সমর্থন করবেন কিনা সে রায় জানাবেন।
বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের কোনও দেশের নাগরিক যদি বিয়ে কিংবা রক্তসম্পর্কের দিক দিয়ে ইতালির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, তাহলে তাকে অন্তত ১০ বছর দেশটিতে বাস করার পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হয়।
এ প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব পেতে আরও কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যায়। নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের সময় কমলে তা দেশটিতে বাস করা প্রায় ২৫ লাখ বিদেশি নাগরিক উপকৃত হবে এবং ইতালির নাগরিকত্ব আইন জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে একই কাতারে চলে আসবে।
তবে এই প্রশ্নে গণভোট তখনই বৈধতা পাবে যদি মোট ভোটারের অন্তত ৫০ শতাংশ ভোটে অংশ নেয়। পর্যাপ্ত ভোটার ভোটে অংশ নাও নিতে পারে এমন আশঙ্কা আছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ভোটকেন্দ্রে যাবেন বললেও ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন।
তার সরকারের মন্ত্রীরাও ভোট দেবেন না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। মেলোনিপন্থি অন্যান্য দলগুলোও ইতালীয়দেরকে ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে বরং সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
নাগরিকত্ব ছাড়াও ব্যালটে বাকি চারটি প্রস্তাব রয়েছে শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে। এগুলো হল- শ্রম বাজারে কোনও শ্রমিক যেন সহজে চাকরি থেকে বরখাস্ত না হতে পারে, ছোটখাট ব্যবসায় শ্রমিক বরখাস্তের ক্ষেত্রে তার ক্ষতিপূরণ বাড়ানো, শ্রমিকের অস্থায়ী চাকরি স্থায়ীকরণ এবং কর্মক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা।
আল-জাজিরা লিখেছে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত একটি জনমত জরিপের ফলে দেখা গেছে, ইতালির ভোটারদের মাত্র ৪৬ শতাংশ গণভোটের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানেন।
গণভোটে ভোটার উপস্থিতি কেমন হতে পারে তার আরও উদ্বেগজনক পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি হতে পারে, যা প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশের অনেক কম।
ইতালিতে অতীতে ৭৮টি গণভোটের অনেকগুলোই ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।