Published : 10 Jul 2024, 05:42 PM
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পরিচালিত গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) ফোন কলে ও বার্তায় আড়িপাতার আইনি অধিকার পেয়েছে।
দেশটির আইনমন্ত্রী আজম নাজীর তারার মঙ্গলবার পার্লামেন্টকে জানিয়েছেন, ৮ জুলাই তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক নোটিশে এই বিষয়টি কার্যকর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেছেন, “যে এই আইনের অপব্যবহার করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি জানান, এই পদক্ষেপ শুধু অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড অনুসরণ করাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, এটি যেন জনসাধারণের জীবন ও গোপনীয়তা লঙ্ঘন না করে সরকার তা নিশ্চিত করবে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে দেওয়া নোটিশটি দেখেছে রয়টার্স; তাতে বলা হয়েছে, “জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ও কোনো অপরাধের আশংকায় কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত কর্মকর্তাদের কল ও বার্তায় হস্তক্ষেপ করতে অথবা যে কোনো টেলিকম পদ্ধতির মাধ্যমে কল শনাক্ত করার অনুমতি দেবে।”
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানের ইতিহাসের প্রায় অর্ধেক সময় দেশটি সামরিক শাসনের কবলে ছিল। দেশটির প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী সরকার গড়তে ও ভাঙতে বড় ভূমিকা পালন করে। এখন সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা নতুন এই ক্ষমতা পাওয়ায় রাজনীতিতে তাদের ভূমিকা আরও জোরদার হবে বলে ধারণা বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
আইএসআইকে ফোনে আড়িপাতার বৈধতা দেওয়ায় বিরোধী দলসহ সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্লামেন্টে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছে।
দলটির এক নেতা ওমর আইয়ুব খান জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থাটি তাদের এই ক্ষমতা সরকারি দলের আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করতে পারে। তাদের দল আদালতে গিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ক্ষমতায় থাকাকালে ইমরান খানও রাজনীতিবিদদের টেলিফোনে আইএসআইয়ের নজরদারিতে সমর্থন যুগিয়েছিলেন, যদিও সেসময় এর কোনো আইনি অনুমোদন ছিল না।
এসব বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরকে অনুরোধ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠী ‘বলো ভাই’ এর ফারিহা আজিজ সামাজিক মাধ্যম এক্স এ লিখেছেন, “যা ‘আইনসম্মত’ তা সংবিধানসম্মত বা সঠিক কি না?”