Published : 12 May 2025, 12:03 PM
সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় দুই দেশের মধ্যে হওয়া বাণিজ্য আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এই আলোচনাকে ‘ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক’ বলেছেন; আর চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে ‘বিশদ’ ও ‘খোলামেলা’ আলাপচারিতা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ একে ‘বাণিজ্য চুক্তি’ অ্যাখ্যা দিলেও এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি, সোমবারের যৌথ বিবৃতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, বলছে বিবিসি।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর জানুয়ারি থেকেই ট্রাম্প চীনা পণ্যে একের পর এক শুল্ক দিয়ে যাচ্ছিলেন, তার পাল্টায় বেইজিংয়ের নানান পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে ওলট-পালট করে দেওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি করেছিল।
এই পরিস্থিতিতে বেসেন্ট ও লাইফেংয়ের নেতৃত্বে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় দুইদিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন।
তাদের আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার খবরে সোমবার সকালে চীন ও হংকংয়ের শেয়ার বাজারে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। চীনের মুদ্রা ইউয়ানকেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী দেখা যাচ্ছে।
বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে খোঁজখবর রাখা এক বিশেষজ্ঞ বিবিসির বিজনেস টুডে অনুষ্ঠানে বলেছেন, সোমবার দুই দেশই একে অপরের পণ্যে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিতে পারে বলে তার আন্দাজ।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক সাবেক আন্ডারসেক্রেটারি ফ্র্যাঙ্ক লেভিন বলেছেন, দুই দেশ শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিতে পারে বলে তিনি আশা করছেন, এরপরও তা ‘অতীতের তুলনায় বেশিই থাকবে’।
তবে এতটাও আশাবাদী নন হাইনরিচ ফাউন্ডেশনের বাণিজ্য নীতির প্রধান ডেবোরাহ এলমস।
“তথাকথিত এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক নিয়ে সমাধানে আসা যেত, কিন্তু সেটা সম্ভবত হচ্ছে না। আমার মনে হয়, খুব বেশি হলে (দুই দেশ) নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেছে,” বিবিসির নিউজডে অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেছেন তিনি।
জেনিভায় দুইদিনের আলোচনা শেষে মার্কিন বাণিজ্য দূত জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন, “চীনা অংশীদারদের সঙ্গে আমরা যে চুক্তি করেছি তা যুক্তরাষ্ট্রে ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে সহায়তা করবে।”
বেসেন্ট বলেছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ করেছে। আর চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লাইফেং বলেছেন, “আলোচনাটি শুধু দুই দেশের জন্যই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
তিনি জানান, দুই দেশ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হয়েছে এবং একটি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য পরামর্শক প্রক্রিয়া দাঁড় করাতে সম্মত হয়েছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিদর্শক এনগোজি ওকোনজো-ইউয়েলা জেনিভার আলোচনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে।
“আমি দুই দেশকে আহ্বান জানাই, তারা যেন এই গতি ধরে রেখে এমন ব্যবহারিক সমাধান খোঁজে যা উত্তেজনা কমাবে, নির্ভরযোগ্যতা ফিরিয়ে আনবে এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্যব্যবস্থার ওপর আস্থা পুনঃস্থাপন করবে,” বিবৃতিতে বলেছেন তিনি।