Published : 28 May 2025, 07:45 PM
ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কয়েকটি শর্তের মধ্যে আছে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর পূর্বদিকে সম্প্রসারণ বন্ধের দাবি।
পশ্চিমা নেতাদের কাছ থেকে নেটোর এই সম্প্রসারণ বন্ধের লিখিত প্রতিশ্রুতি চায় রাশিয়া। একইসঙ্গে রাশিয়া চায় তাদের ওপর থেকে কিছু পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও যেন উঠে যায়।
ইউক্রেইন-রাশিয়া শান্তি আলোচনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন রুশ কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। তাদের একজন বলেন, “রাশিয়া শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত। কিন্তু এর জন্য কোনও মূল্য দিতে রাজি নয়।”
পূর্বদিকে নেটো জোটের সম্প্রসারণ বন্ধের যে দাবি রাশিয়া জানিয়েছে, তার মানে হচ্ছে- ইউক্রেইন, জর্জিয়া, মলদোভা ও অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত প্রজাতান্ত্রিক দেশগুলোকে নেটো সদস্যপদ দেওয়া হবে না এ মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়া।
ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকে বারবারই ইউক্রেইন যুদ্ধ শেষ করতে চাওয়ার কথা বলে আসছেন। কিন্তু রাশিয়া যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসছে না।
রুশ বাহিনী তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে ইদানিং ইউক্রেইনে অন্যতম প্রাণঘাতী ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এসব নিয়ে সম্প্রতি কয়েকদিনে ক্রমবর্ধমান হতাশার মধ্যে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন., ইউক্রেইনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘আগুন নিয়ে খেলছেন’।
গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার বেশি সময় কথা বলার পর পুতিন জানান, তিনি ইউক্রেইনের সঙ্গে শান্তি চুক্তির রূপরেখা তৈরিতে একটি স্মারক নিয়ে কাজ করতে রাজি। যাতে যুদ্ধবিরতির সময়সীমাও উল্লেখ থাকবে।
রাশিয়া বলছে, তারা বর্তমানে সেই স্মারকের খসড়া সংস্করণ তৈরি করছে। এটি তৈরিতে কত সময় লাগবে সে ধারণা তারা দিতে পারছে না।
ইউক্রেইন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ব ইউক্রেইনে যুদ্ধে রুশ সেনাদের অগ্রগতির মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে স্থবির করে রাখার অভিযোগ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন রুশ কর্মকর্তা বলেছেন, কেবল নেটো সম্প্রসারণ বন্ধই নয়, রাশিয়া আরও চায়- ইউক্রেইন নিরপেক্ষ থাকুক, মস্কোর ওপর থেকে পশ্চিমা কিছু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাক, পশ্চিমা দেশগুলোতে রাশিয়ার জব্দ সার্বভৌম সম্পদের বিষয়টির সুরাহা হোক এবং ইউক্রেইনের রুশ বক্তারা সুরক্ষিত থাকুক।
যদি পুতিন বুঝতে পারেন যে, তার শর্তগুলোর ভিত্তিতে তিনি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছতে পারছেন না, তাহলে তিনি সামরিক অভিযানে জয়ের মধ্য দিয়ে ইউক্রেইন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে এটাই দেখানোর চেষ্টা নেবেন যে, “আগামী দিনগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠা আরও বেশি কষ্টকর হবে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে প্রকাশিত এই খবরের বিষয়ে ক্রেমলিন কোনও মন্তব্য করেনি। তবে রাশিয়ার কর্মকর্তারা এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন বরাবরই বলে এসেছেন, কোনও শান্তি চুক্তি হতে গেলে তাতে সংঘাতের ‘মূল কারণগুলো’ অবশ্যই আলোচনায় উঠে আসতে হবে।