Published : 14 May 2025, 08:29 PM
কানাডার মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। এর মধ্য দিয়ে কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ।
কানাডার মন্ত্রিসভায় অবশ্য আগে থেকেই ছিলেন অনিতা আনন্দ। তিনি এর আগে কানাডার প্রতিরক্ষা দপ্তরসহ অন্যান্য আরও মন্ত্রীপদের দায়িত্বে সামলেছেন।
এবার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলোনি জোলির স্থলাভিষিক্ত করা হল তাকে। আর জোলিকে দেওয়া হয়েছে শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব।
ভারতীয় পত্রিকা এনডিটিভি জানায়, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বৃহস্পতিবার গীতায় হাত রেখে শপথবাক্য পাঠ করেছেন আনন্দ।
এরপর এক্সে তিনি লেখেন, “কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য সম্মানের বিষয়। একটি নিরাপদ ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে আমি অধীর আগ্রহ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ও আমাদের টিমের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।”
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমল থেকে ভিন্নভাবে মন্ত্রিসভা গড়ে তুলতে এটিকে ঢেলে সাজাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। তার মন্ত্রিসভায় আছে ২৮ জন মন্ত্রী।
অভিজ্ঞতা এবং বৈচিত্রের ভারসাম্যে ভরপুর তার এই মন্ত্রিসভা। তার সরকারের অর্ধেক পদেই আছে নারী।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনর সম্পর্কের মধ্যে কানাডীয়রা যে পরিবর্তন চায় এবং তাদের যেটা দরকার, সেভাবেই মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদেরকে বাছাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কার্নি।
কে এই অনিতা আনন্দ?
অনিতা আনন্দ পেশায় একজন আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ। এর আগে কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, পরিবহন মন্ত্রী, উদ্ভাবন, বিজ্ঞান এমনকি শিল্পমন্ত্রীরও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এবার তিনি সামলাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব।
তার বাবা-মা অভিবাসী। মা পাঞ্জাবি, বাবা তামিল। সরোজ ডি রাম এবং এস ভি আনন্দ। ১৯৬০ সালে তারা কানাডায় পাড়ি জমান। তাদের মেয়ে অনিতা আনন্দর জন্ম নোভা স্কটিয়ার কেন্টভিলে, ১৯৬৭ সালের ২০ মে।
আনন্দ আইন নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। এছাড়াও ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
রাজনীতিতে যোগদানের আগে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। ২০১৯ সালে প্রথম বার হাউস অব কমন্সের ভোটে দাঁড়িয়ে আনন্দ নির্বাচিত হন ওকভিল থেকে।
দায়িত্ব পান ক্রয় ও জনকল্যাণ দফতরের। কোভিড মহামারীর সময়ে টিকা ও সুরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার। কানাডার ট্রেজ়ারি বোর্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেছেন।
ক্ষমতসীন লিবারেল পার্টির ভেতরে মতবিরোধের জেরে কাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদতাগের পর যাদের নাম ‘প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার’ হিসেবে উঠে এসেছিল, তাদের মধ্যে ছিলেন অনিতা আনন্দও।
জাস্টিন ট্রুডোর আমলে খালিস্তানপন্থি শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদে কানাডার মদদ ঘিরে নয়াদিল্লি-অটোয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আনন্দর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়া ভারতের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকদের অনেকেই।