Published : 16 Jun 2024, 12:11 PM
ইউক্রেইনের ভবিষ্যৎ চুরি করার জন্য রাশিয়া দেশটির শিশুদের অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেইনের প্রচারকরা। তারা বলছেন, এতে ওই শিশুরা গভীর মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এসব শিশুকে ইউক্রেইনে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
কিইভ বলছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২০ হাজার শিশুকে তাদের পরিবার বা অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই রাশিয়া বা রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, এই অপহরণ একটি যুদ্ধপরাধ যা জাতিসংঘের গণহত্যা চুক্তির সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে।
কিন্তু মস্কো বলছে, তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অরক্ষিত শিশুদের সরিয়ে নিয়ে তাদের রক্ষা করেছে।
সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেইন ‘শান্তি সম্মেলন’ চলাকালে এক ফাঁকে সেভ ইউক্রেনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মাইকোলা কুলেবা বলেন, “রাশিয়া আমাদের ভবিষ্যত চুরি করছে। তারা প্রতারণা, শিশুদের প্ররোচিত করা এবং ইউক্রেনীয় জাতির গণহত্যার ওপর ভিত্তি করে তাদের কৌশল রচনা করেছে।’
ওই অনুষ্ঠানে তিনি ৮ বছর বয়সী একটি মেয়ের গল্প বলেছিলেন। শিশুটিকে রাশিয়ার একটি শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। কুলেবা বলেন, সেখানে তার ইউক্রেনীয় পরিচয় মুছে ফেলার জন্য সবধরণের চেষ্টা চালানো হয়।
তিনি বলেন, "শিশুদের ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বলা বা ইউক্রেনীয় প্রতীক প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাশিয়ার জাতীয় সংগীত গাইতে না চাইলে শিশুদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।”
কুলেবা আরও বলেন, রুশ কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে শিশুদের নাম ও জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে।
সেভ ইউক্রেন ৮৮ জন এতিমসহ ৩৭৩ শিশুকে ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে কুলেবা বলেন, ফিরে আসা অনেকের মধ্যে মানসিক আঘাতের ক্ষত লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি একটি ৫ বছর বয়সী ছেলের কথা উল্লেখ করে বলেন, শিশুটি তার বাবাকে দখলদার সৈন্যদের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে দেখেছিল। চোখের সামনে বাবাকে নির্যাতিত হতে দেখে শিশুটি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে।
কুলেবা অপহৃত শিশুদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের মার্চে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণের সাথে সম্পর্কিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং শিশু কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করে।
রাশিয়া এই অভিযোগকে ‘আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য' বলে নিন্দা জানিয়েছে। বেলোভাও এই অভিযোগকে মিথ্যা অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) জানিয়েছে, তারা ওই শিশুদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। 'কয়েক ডজন' শিশুকে ইউক্রেনে তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রেডক্রসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।