Published : 02 Jan 2024, 10:58 AM
জাপানে নতুন বছরের প্রথমদিনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু এবং বহু ভবন ভেঙে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পের পর থেকে হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে রয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে (০৭:১০ জিএমটি) ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি জাপানের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে। তারপর আরও ১৪০ বারেরও বেশি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। যেগুলোর মাত্রা ছিল ৩ থেকে ৬ দশমিক ১। আগামী অন্তত এক সপ্তাহের মধ্যে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ভূমিকম্পের পর জাপানের পশ্চিম উপকূলের কয়েকটি অংশে সুনামি হয়েছে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হলে উপকূলীয় কিছু এলাকার বাসিন্দারা উঁচু স্থানে সরে যায়। পরে সুনামির ঢেউয়ে কিছু গাড়ি ও বাড়ি সাগরে ভেসে যায়, জানিয়েছে রয়টার্স।
ভূমিকম্পের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এলাকাগুলোতে পৌঁছতে মঙ্গলবার জাপানের উদ্ধারকারী দলগুলোকে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল। ভূমিকম্পে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের নোতো উপদ্বীপ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার সামরিক বাহিনীর সদস্য, দমকল কর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তা ওই এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ও রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ নির্ণয় করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে তাদের।
ইশকাওয়া প্রিফেকচারের বহু রেল পরিষেবা, ফেরি ও ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের একটি বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুর্যোগ নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, “ভূমিকম্পে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করা ও উদ্ধার করা সময়ের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ।”
কিশিদা জানান, রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নোতো উপদ্বীপের উত্তরপ্রান্তে পৌঁছনো উদ্ধারকারীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় চালানো হেলিকপ্টার জরিপে অনেক জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে আর ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হয়েছে।
ইশিকাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এ পর্যন্ত নিশ্চিত হয়েছে তারা। এদের মধ্যে অর্ধেকের মৃত্যু হয়েছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের নিকটবর্তী শহর ওয়াজিমায়।
জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে এর আগে জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের নিকটবর্তী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াজিমা শহরেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানে ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অন্তত ১৪ জন আটকা পড়ে আছেন।
জাপানের দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালের দিকে তারা ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছে, কিন্তু এটি নিশ্চিত হয়নি। ভূমিকম্পে নিহতদের নিয়ে জাপানের সরকারি হিসাবে এ সংখ্যাটি উল্লেখ করা হয়নি।
আরও খবর:
জাপানে ভূমিকম্প: হাজারো মানুষ রাত কাটাচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে