Published : 12 Apr 2023, 01:47 PM
অবসরকল্পনা
আঁধারবন্দি পোকামাকড়ের হৃদয় আর
সবুজগ্রস্ত পাখিদের আত্মকথা ঝোলায় ভরে
আমি বেরিয়ে পড়ি নিরুদ্দেশে
কন্ঠস্বরের মেদুরতা আমাকে ভাবায়
বনতরুদের মর্মলোক, বসন্তের গহ্বর!
সকালের আলোয় দুটি মন-খারাপ ঘোড়া
অন্যমনস্কতার ভেতর ঘাস চিবায়
আমাকে চিন্তায় ফেলে দেয়
গভীর অন্ধকারে তেলাপোকার চলাফেরা
হাওয়া-লাগা শিথিল নারীচুলের হাতছানি!
অসামান্য বিকেলে খুলে যায়
ফলবাগানের রূপ। সামান্য অবসর
ঝর্ণা দেখার শান্তি এনে দেয় আমার দুচোখে!
ছবি
খোলস ছাড়ার পর একটা সাপ মরে পড়ে আছে
নদীর তীরে, পাথরখন্ডের ছায়ায়
নদীতে মুলমুলে হাওয়া
নদীতীরে শান্ত কাশবন
নদীতে দাঁড়ের শব্দে ভেঙে পড়ছে আশা
নদীতীরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলেছে দু'জন লোক
তাদের মনে সন্দেহভরা ভালোবাসা
এদিকে পিঁপড়ার দল কাঁধে নিয়েছে
ওই সাপের খোলস
কাশবনের ছায়ায় এগোচ্ছে সাপের খোলস
আমি শুনতে পাচ্ছি পিঁপড়াবাহিনীর
হেঁইয়ো হেঁইয়ো, মারো টান হেঁইয়ো
আরো জোরে, হেঁইয়ো -----
যারা বেঁচে আছে
যারা বেঁচে আছে তারা সবুজ ঘাসের পথ
মাড়িয়ে এখানে আসে
তারা পাহাড়ের চড়াই উৎরাই পার হয়ে
উঠে যায় তীর্থমন্দিরে। পাহাড়ি
বনের পাখি মুচকি হেসে চলে যায়!
বলে যায়, কী মানে এই মরীচিকাভ্রমণের
উপত্যকার উচ্চাশী গাছের মাথা ছুঁয়ে আসা
ঠান্ডা বাতাস আবার ঘুরে চলে যাবে
ফেলে আসা পাথর অভিমুখে ----
উচ্ছ্বাসের মুহূর্তে হঠাৎ ঢুকে পড়বে
দড়িপথ পেরোনোর সময়কার অনুভূতি,
যারা বেঁচে আছে তারা পাথরে জমাট বাঁধা
দীর্ঘশ্বাস পড়ে নিতে আবার আসবে পানছড়ি!
কেন
কালভার্টের নিচে মাতালের অসংলগ্ন
আলাপের মতো কৌতুকপ্রদ জলশব্দ
আমি তার পাশে বসে নাচের ঝঙকার শুনি
পৃথিবীর চিরপ্রিয়তমার হাসির সুবাস পাই
এমন ঝিরিঝিরি হাওয়া-জল ভাববিহ্বল
সুসময়ে কেন ঢুকে পড়ে এই ছবি ----
বড় রাস্তার ওপর চ্যাপ্টা হয়ে পড়ে আছে
স্হির চোখ, ফকফকা, নিঃশব্দ খরগোশ !
ব্রেক-আপ এর কাল
এখন অবলীলায় ছেলে-মেয়েরা বলে,
ওর সাথে আমার ব্রেক - আপ !
না , একথা বলার সময় তাদের গলা কাঁপে না
অন্যমনস্ক চোখে তারা দেখতে পায় না
কুয়াশার ছোট নদী বা রোদপোড়া ফাঁকা মাঠ
এখন ফ্রেন্ড আর গার্ল ফ্রেন্ডের মাঝখানে
ফ্রেন্ড আর বয় ফ্রেন্ডের মাঝখানে
গজিয়ে উঠেছে বড় বড় ফণীমনসা!
সন্দেহের মেঘ খুব সহজে ঢুকে পড়ছে
ছেলে-মেয়েদের ফাঁপা মাথায় মাথায় ----
এক সময় প্রেম ছিল দার্শনিক
তা ছিল বাঁচার বা আত্মহননের বীজ
তারপর প্রেম হলো আধুনিক
এরপর আমরা শুনবো, প্রেম উত্তরাধুনিক!
মাতাল হওয়ার সুবিধা
আশেপাশে গান নেই
কিন্তু তুমি ভেসে যাচ্ছো সুরেলা একটা
গানের সুবাসে। কেউ কথা বলছে না
তোমার সামনে অথবা পেছনে
কিন্তু তুমি শুনতে পাচ্ছো, অদূরে
এক দল মানুষ কথা বলছে একসাথে
অনবরত বকবক করছে গরম কেতলির মুখ
মাতাল হলে অপ্রিয় সত্য অসঙ্কোচে বলে ফেলা যায়, এমনকি তোমার প্রাণবন্ধুকেও!
মাতাল হলে বকা দিয়ে শান্তি পাওয়া যায়
কেননা যাকে বকছো সে কিছু মনে করছে না
মাতাল হলে প্রজাপতির টাল খেতে খেতে
উড়ে যাওয়ার মজা টের পাওয়া যায় !