Published : 11 Sep 2024, 07:21 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তার স্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদেরকে।
মাহমুদুল হাসান জয় (১৪) নামের ওই কিশোর নিহতের ঘটনায় মঙ্গলবার মো. রবিউল আউয়াল নামের এক ব্যক্তি ঢাকার মহানগর হাকিম সাদ্দাম হোসেনের আদালতে মামলার আবেদন করেন।
বিচারক মামলা আমলে নিয়ে যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে যথাযথ তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, তার স্ত্রী শেরিফা কাদের, হামীম গ্রুপের উপদেষ্টা এ কে আজাদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো অন্তত ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার মূল অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী অভিযোগে জানান, ১৪ বছর বয়সী মাহমুদুল হাসান জয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন। দেশব্যাপী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫ অগাস্ট শনির আখড়া এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
মিছিলে সম্মুখসারিতে ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। মিছিলে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালালে জয়সহ আরও অনেক নিরীহ ছাত্র আহত হয়। জয়কে সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ অগাস্ট ভোরে তার মৃত্যু ঘটে।
এতে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য আসামিরা আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সমর্থকদেরকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই হত্যা মামলা।
কোনো মহলের প্ররোচনায় মামলা: চুন্নু
এদিকে জি এম কাদের ও শেরিফা কাদেরকে মামলার আসামি করায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেছেন, জি এম কাদের একমাত্র নেতা যিনি আন্দোলনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সংসদে ১০ মিনিট বক্তব্যও রেখেছেন।
“তারপর আমরা ওপেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে নেমেছি। রংপুরে আমাদের লোকজনের সঙ্গে মারামারিও হইছে। এসবের পরেও আন্দোলনে লোক মারা যাওয়ার ঘটনায় জিএম কাদের আসামি, এটা ভেরি ইনটেনশনালি, কোনো মহলের প্ররোচনায়। আর এটার নিন্দা জানাই। উনি এ ধরনের মামলার আসামি হতে পারে না।”
এমন ঘটনায় জি এম কাদেরের সম্পৃক্ততার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই মামলা টিকবে না। এটা ভিত্তিহীন মামলা। আর এ ধরনের মামলা কেন দেওয়া হলো তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আমরা কথা বলব। আর এখনও আমরা সব কিছু অফিসিয়ালি জানি না। কাগজ হাতে আসার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।”